পর্যটন শিল্পে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ আবেদন শুরু ১ নভেম্বর

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন শিল্প। এ শিল্পে চলতি মূলধনের জোগান দিতে এক হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তহবিল থেকে পর্যটন খাতে নিয়োজিত শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিতে ৪ শতাংশ সুদে উদ্যোক্তাদেরকে এক বছর মেয়াদি ঋণ দেয়া হবে।
ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ তহবিল বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে জোগান দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাকি ৫০ শতাংশ অর্থ ব্যাংক তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে দেবে।
প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণের জন্য ১ নভেম্বর থেকে আবেদন করতে পারবে ব্যাংকগুলো। আবদন করা যাবে ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত।
আজ (২৫ অক্টোবর) সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এই সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়। ব্যাংকগুলোকে অবিলম্বে এ ঋণ কর্মসূচি শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘ঋণ সুবিধা ভোগকারী পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে (হোটেল/মোটেল/থিম পার্ক) বর্তমানে কর্মরত কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের লক্ষ্যে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তিতে বিদ্যমান ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা বাবদ মঞ্জুরীকৃত বা প্রদত্ত সীমার সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ এবং এরূপ ক্ষতিগ্রস্থ যে সব প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ব্যাংক হতে ঋণ সুবিধা ভোগ করছে না সেসব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আগ্রহী ব্যাংকের বিদ্যমান নীতিমালার আওতায় ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা বাবদ সম্ভাব্য ঋণ প্রাপ্যতার সীমার সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ধরে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে উক্ত পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করা যাবে।’

পর্যটন খাতের উদ্যোক্তারা দীর্ঘদিন ধরে এ খাতে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। এই প্রথমবারের মতো সরকার এ খাতের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করল। গত ১৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী এ প্যাকেজ অনুমোদন করেছেন। সে আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক এই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
পুনঃঅর্থায়নের জন্য ১ নভেম্বর থেকে আগামী বছরের ৩১ অক্টোবর সময়ের মধ্যে অফ-সাইট সুপারভিশন বরাবর আবেদন করতে হবে। এই ঋণ বিতরণে আগ্রহী ব্যাংকগুলোকেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগের সাথে একটি অংশগ্রহণমূলক চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে।
ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় চাওয়া হয়েছে মর্মে প্রতিটি আবেদনের সঙ্গে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ন পত্র দাখিল করতে হবে।
প্রতিটি গ্রাহকের (পুরাতন/নতুন) ঋণ সীমা (বিদ্যমান ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধার অথবা প্রাপ্যতার পরিমাণের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ) নির্ধারণ সংক্রান্ত হিসাবায়ন নির্ধারিত ছকে আবেদনপত্রের সাথে দাখিল করতে হবে এবং এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যাদি বাংলাদেশ ব্যাংকের চাহিদা মোতাবেক সংরক্ষণ করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আারো বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যাংক প্রকৃত চাহিদার পরিমাণ হিসাবায়নপূর্বক ঋণ বিতরণ করবে এবং বিতরণকৃত অর্থের সদ্ব্যবহার যাচাইপূর্বক বাংলাদেশ ব্যাংক হতে পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণের জন্য আবেদন করবে। প্রণোদনা প্যাকেজের সময়ের আওতায় প্রতিটি মাসের বেতন প্রদানের ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধের জন্য গ্রাহক ঋণ গ্রহণের তারিখ হতে এক বছর সময় পাবেন। ঋণের মোট সুদের হার হবে ৮ শতাংশ। এর মধ্যে উদ্যোক্তাকে দিতে হবে ৪ শতাংশ। সরকার ভর্তুকি হিসাবে দেবে ৪ শতাংশ। প্রণোদনার আওতায় উদ্যোক্তারা এক বছর এ ঋণ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। ঋণের মেয়াদ বাড়ানোর প্রয়োজন হলে বাড়ানো যাবে। ###

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.