বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলবাসীর অপেক্ষার পালা শেষ হয়েছে। স্বপ্নের ‘পায়রা সেতু’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করব।

আজ (২৪ অক্টোবর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কর্ণফুলী সেতুর আদলে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন এই সেতুটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের মূল আয়োজন করা হয়েছে পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার লেবুখালী সেতু এলাকায়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বলেই আপনাদের সঙ্গে গণভবনে বসেও কথা বলতে পারছি, মিলিত হতে পারছি। তবে এটা ঠিক যে আমি যদি সেখানে উপস্থিত থাকতে পারতাম, পায়রা সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যেতে পারতাম বা সেতুতে নেমে যদি একটু দাঁড়াতে পারতাম, পায়রা নদীটা দেখতে পারতাম, যে নদীতে আমি সব সময় স্পিডবোটে চড়েছি, সেই নদীর ওপরের ব্রিজে যদি হাঁটতে পারতাম। তবে সত্যি খুব ভালো লাগত।

করোনা পরিস্থিতির কারণে যেতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, কিন্তু করোনার কারণে আসলে এক প্রকার বন্দিজীবন, সে জন্য আর সেটা হলো না। তবে আমার আকাঙ্ক্ষা আছে, একদিন গাড়ি চালিয়ে সম্পূর্ণ আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন, দৃষ্টিনন্দন এ নতুন সেতুটা দেখতে যাব অবশ্যই। তবে আমার ইচ্ছা আছে, পরিস্থিতি বুঝে একদিন পায়রা সেতুর ওপর দিয়ে আমি গাড়ি নিয়ে যাবে। কাছ থেকে দেখব সেতুটি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যারা দেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল তারাই চায় না দেশের মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। কিন্তু আজ বাংলাদেশের নাম শুনলে সবাই সম্মান করে। বিশ্বে বাংলাদেশের একটা মর্যাদার জায়গা তৈরি হয়েছে।

এদিকে একই অনুষ্ঠানে তিনি ঢাকা-সিলেট এবং সিলেট তামাবিল মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নতীকরণ প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করেন। ঢাকায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের পটুয়াখালী জেলার দুমকী উপজেলার লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর নির্মাণ হয়েছে পায়রা সেতু। কিন্তু স্থানীয়ভাবে বলা হয় লেবুখালী ব্রিজ। পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ ছিল শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। ২০১৩ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালীর লেবুখালীতে এসে পায়রা নদীর ওপর নির্মিত এ সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট, ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ বিনিয়োগে ১১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয় সেতুটি। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লনজিয়াল ব্রিজ অ্যান্ড রোড কনস্ট্রাকশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।

বিভাগীয় শহর বরিশাল থেকে পটুয়াখালী জেলা শহরের দূরত্ব সড়কপথে ৩৮ কিলোমিটার। আগে বরিশাল থেকে পটুয়াখালী পৌঁছতে সময় লাগত পাঁচ ঘণ্টা। পাঁচটি ফেরি ছিল এ দেরির প্রধান কারণ। নব্বইয়ের দশকে চারটি ফেরির স্থানে সেতু নির্মিত হলে কমতে থাকে বিড়ম্বনা। সর্বশেষ ফেরি পারাপার ছিল স্রোতস্বিনী পায়রা নদীর লেবুখালী পয়েন্টে।

প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ১০টি মেগা প্রকল্পের অন্যতম পায়রা নদীতে নির্মিত সেতুটি উদ্বোধনের ফলে বরিশাল থেকে পটুয়াখালী হয়ে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে যেতে ফেরি যুগের অবসান ঘটলো। বরিশাল থেকে পটুয়াখালী যেতে সময় লাগবে এক ঘণ্টারও কম। দুই ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছা যাবে কুয়াকাটায়।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.