আরও ৭ টাকা বাড়ল সয়াবিন তেলের দাম

সয়াবিন তেলের দাম আবারও বেড়েছে। এবার প্রতি লিটারে সাত টাকা বেড়েছে। এতদিন কয়েক দফা বেড়ে দর ছিল ১৫৩ টাকা। এখন থেকে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৬০ টাকা দরে।

আজ (১৯ অক্টোবর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এ কথা জানায় বাংলাদেশ ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী ও বনস্পতি উৎপাদক সমিতি। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে তেলের এ দাম নির্ধারণ করে সংগঠনটি।

এ তথ্য নিশ্চিত করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘আগামীকাল থেকে নতুন দামে সয়াবিন তেল বিক্রি হবে।’

এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬০ টাকায় বিক্রি হবে। এছাড়া পাঁচ লিটারের এক বোতল তেল পাওয়া যাবে ৭৬০ টাকায়; যা এত দিন ৭২৮ টাকা ছিল। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১৩৬ টাকা ও বোতলজাত পাম সুপার তেল ১১৮ টাকা দরে কিনতে পারবেন ক্রেতারা। এই দর অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে বাংলাদেশ ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী ও বনস্পতি উৎপাদক সমিতির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। তবে পরিবেশক ও খুচরা পর্যায়ে পুরোনো মজুতের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না বলেও এতে বলা হয়।

এর আগে রোববার ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি দেয়। রোববার ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী বিভিন্ন কোম্পানি ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও আমদানি বিভাগ। এতে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর লিটারে চার টাকা বাড়িয়ে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তখন দেশের বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল সর্বোচ্চ ১২৯ টাকা এবং এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা এবং প্রতি পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৭২৮ টাকা দর নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আর প্রতি লিটার পাম সুপার ওয়েল খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১১৬ টাকা দর নির্ধারণ করা হয়। যদিও নির্ধারিত দরে ভোজ্যতেল তেমন বেচাকেনা হচ্ছে না।

কিন্তু বিশ্ববাজারে বর্তমানে ভোজ্যতেলের দাম কমছে। নিত্যপণ্যের বাজার বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম কমছে। সেপ্টেম্বর মাস শেষে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল এক হাজার ৩৯৮ ডলারে বেচাকেনা হয়েছে। গত আগস্টে যার প্রতি টনের দাম ছিল এক হাজার ৪৩৪ ডলার। তার আগে জুলাইয়ে প্রতি টন অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের দাম ছিল এক হাজার ৪৬৮ ডলার, জুনে এক হাজার ৫১৮ ডলার এবং মে মাসে এক হাজার ৫৭৪ ডলার। চলতি অক্টোবরে দাম আরও কমেছে। অথচ দেশের বাজারে পণ্যটির দাম বাড়ছেই।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশে বছরে ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে দেশে উৎপাদিত সরিষা, সূর্যমুখীসহ অন্যান্য তেলবীজ থেকে সোয়া দুই লাখ টন তেল পাওয়া যায়। বাকিটা আমদানি করতে হয়। মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে থেকে এসব তেল আমদানি হয়ে থাকে। হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি পরিশোধিত ও অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানি করে বাজারজাত করছে।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.