এফআর টাওয়ারে নকশা জালিয়াতি মামলায় চারজনের বিচার শুরু

বনানীর এফআর টাওয়ার নির্মাণে নকশা জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতির দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন খাদেমসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘটনায় বিচার শুরু হলো।

সোমবার ঢাকার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক কামাল হোসেন আসামিদের উপস্থিতিতে এ অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে আগামী ১৫ অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ইজারা গ্রহীতা সৈয়দ মো. হোসাইন ইমাম ফারুক (এস এম এইচ আই ফারুক), রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (বর্তমান চেয়ারম্যান) লিয়াকত আলী খান মুকুল ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান।

২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর আগে ২০১৮ সালের ২৫ জুন উপপরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। যেখানে দণ্ডবিধির চারটি ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

২০১৯ সালের ২৮ মার্চ দুপুরে বনানীর ১৭ নম্বর রোডের এফআর টাওয়ারে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসসহ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর কয়েকটি দল প্রায় ৬ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৭ জন নিহত হন এবং ৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন।

পরবর্তীতে রাজউকের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান জানান বনানীর ওই ভবনটি রাজউকের অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করে তৈরি করা হয়েছিল।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন এবং নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলাবিশিষ্ট এফ আর টাওয়ার নির্মাণ করেন। ১৯৯০ সালে ১৫ তলা ভবন নির্মাণের জন্য রাজউকের অনুমোদন পান এস এম এইচ আই ফারুক। পরে ১৯৯৬ সালে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন চেয়ে সংশোধিত নকশা অনুমোদনের জন্য আবেদন করেন তিনি। সংশোধিত নকশা ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী না হওয়া এবং প্রস্তাবিত ভবনের উচ্চতা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিধিনিষেধ অনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এর এক মাসের মধ্যেই সংশোধিত নকশা অনুমোদন করা হয়। এ কাজে অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে। পরে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের জন্য জমির মালিক চুক্তিবদ্ধ হন আবাসন প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপের সঙ্গে। রূপায়ন ওই জায়গায় অবৈধ নকশার ভিত্তিতেই ১৮ তলা ভবন নির্মাণ করে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসারে ভবনের দুই পাশে যে পরিমাণ জায়গা রাখার কথা তা–ও রাখা হয়নি। পার্কিয়ের জায়গার ক্ষেত্রেও রাখা হয়েছে প্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণের এক–তৃতীয়াংশ জায়গা। আবাসিক ভবন হিসেবে অনুমোদন নেওয়া হলেও পুরো ভবনটি ব্যবহার হয়েছে বাণিজ্যিক হিসেবে।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.