টানা কিছুদিনের উর্ধমুখী ধারার পর মূল্য সংশোধন শুরু হয়েছে পুঁজিবাজারে। সূচক বিবেচনায় গত ৫ দিন টানা মূল্য সংশোধন হয়েছে। তবে বাস্তবে সংশোধন পর্ব চলছে আরও কয়েকদিন আগে থেকে। ওই ক’দিন বাজারে বেশীরভাগ কোম্পানি শেয়ারের দর হারালেও কয়েকটি বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সূচকে সংশোধনের মাত্রা প্রতিফলিত হয়নি। বরং উল্টো সূচক বাড়তে দেখা গেছে।
এদিকে টানা মূল্য সংশোধনের পর বাজার ফের উর্ধমুখী ধারায় ফেরার সম্ভাবনার কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সূচক ইঙ্গিত দিচ্ছে, বাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ অনেকটা-ই কমে এসেছে। এসব সূচক নতুন বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করার মতো অবস্থানে আছে। তাই এক্সটারনাল কোনো ঘটনা না ঘটলে আজ অথবা কাল-ই বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারে।
গত ৫ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৮১ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট কমেছে।
বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমার কারণে বাজারের গড় মূল্য-আয় অনুপাত (Price earning ratio-PE Ratio) কমেছে। গত ১০ অক্টোবর, পতন শুরু হওয়ার আগের দিন ডিএসইতে অ্যানুয়ালাইজড পিই রেশিও ছিল ১৮ দশমিক ৩৪। গত পাঁচ দিনে তা কমার পর রোববার ১৭ দশমিক ৮৫ হয়েছে।
অন্যদিকে এই সময়ে বাজারে গড় ডিভিডেন্ড ইল্ড (প্রকৃত লভ্যাংশের হার) বেড়েছে। গত ১০ অক্টোবর বাজারের গড় ডিভিডেন্ড ইল্ড ছিল ১ দশমিক ১০ শতাংশ। রোববার তা বেড়ে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ হয়েছে।
টেকনিক্যাল অ্যানালিসিসের নানা সূচকও বাজারে বিক্রির চাপ কমার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই অ্যানালিসিসের একটি জনপ্রিয় সূচক হচ্ছে আরএসআই (Relative Strength Index-RSI)। এটির সর্বনিম্ন মান ০, আর সর্বোচ্চ মান ১০০। এটি ৭০ অতিক্রম করলে ধরে নেওয়া হয় বাজারে অতিরিক্ত কেনা হয়ে গেছে, ক্রয়-চাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম। ফলে বিক্রির চাপ শুরু হতে পারে। আর এটি হলে মূল্যসূচক বা শেয়ারের দামও কমে আসবে। অন্যদিকে আরএসআই ৩০ এর নিচে নেমে এলে ধরে নেওয়া হয়, বাজারে বিক্রির চাপ শেষ। ফলে ধীরে ধীরে ক্রয়-চাপ বাড়তে পারে, যার প্রভাব পড়তে পারে মূল্যসূচক ও শেয়ারের দামে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ১০ অক্টোবর ডিএসইএক্স এর আরএসআই ছিল ৭৪ দশমিক ০৫। গতকাল রোববার তা কমে ৪৬ দশমিক ৩৪ হয়েছে। এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে বাজারে বিক্রির চাপ অনেকটা কমে এসেছে।
এদিকে রোববারের লেনদেনেও বাজারে কিছুটা গতি ফেরার ইঙ্গিত রয়েছে। আগের কার্যদিবসের (বৃহস্পতিবার) তুলনায় ডিএসইতে কাল লেনদেন ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.