তুরাগে নৌকাডুবি: দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান চলছে

সাভারের আমিনবাজার এলাকায় তুরাগ নদে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজদের সন্ধানে আজ আবারো অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরিদল। রোববার (১০ অক্টোবর) সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো শুরু হয় অভিযান।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স এর উপ-পরিচালক দিনমণি শর্মা বলেন, সকাল থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কোনও মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়নি। আমরা ঘটনাস্থলে ও আশপাশের এলাকায় ডুবুরিদের সহায়তায় উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।

নৌবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, রোববার সকাল ৭টা থেকে নৌবাহিনী দুটি দলে মোট নয়জন ডুবুরি অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেছেন। এ পর্যন্তও নিখোঁজ দুইজনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

গতকাল শনিবার (৯ অক্টোবর) ভোরে সাভারের আমিনবাজার এলাকায় তুরাগ নদে বালুভর্তি বাল্কহেডের ধাক্কায় ডুবে যায় শ্রমিকবাহী নৌকা। এ ঘটনায় চার শিশুসহ পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এখনো নিখোঁজ রয়েছে শিশুসহ দুজন।

১১০ ফুট গভীরে তলিয়ে যাওয়া নৌকাটি এরই মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল যাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় তারা হলো সোয়ালা (২০), ইমরান (৪), আলমিনা (৮), ফারহা মনি (৫) ও আরমান (৫)।

বড়দেশী এলাকার বৃদ্ধা চমক জান জানান, নৌকায় তাঁর দুই মেয়ে ও তিন নাতি ছিল। এক মেয়ে ও দুই নাতির লাশ পাওয়া গেলেও মেয়ে রুপায়ন (২৪) ও নাতি জেসমিনের (২) খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। তাঁর দুই মেয়ে নদীর পাশে কয়লা লোড-আনলোডের কাজ করতেন।

জানা যায়, নৌকাডুবিতে নিহত সবাই সিলেট ও সুনামগঞ্জের বাসিন্দা। কয়লার কাজ চলাকালে তারা সিলেট থেকে এই এলাকায় এসে কাজ করত। সবাই আমিনবাজার ইউনিয়নের বড়দেশী গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকত।

বেঁচে ফেরা কাবিল হোসেন জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বড়দেশী গ্রাম হয়ে কেবলারচর থেকে গাবতলীর দ্বীপনগরে যাচ্ছিল নৌকাটি। তুরাগ নদের মাঝখানে এলে দ্রুতগতির একটি বাল্কহেড নৌকার সামনে চলে আসে। এ সময় নৌকাটি একটু পেছনে চলে যায়। তখন পেছন থেকে আসা আরেকটি বাল্কহেড নৌকাকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এ সময় সামনে থাকা বাল্কহেডটি নৌকার ওপর উঠে যায়। তখনই ডুবে যায় নৌকাটি।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, নৌকায় শিশুসহ ১৮ যাত্রী ছিল। নৌকা ডুবে গেলে ১১ জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ থাকে সাতজন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসসহ একাধিক ডুবুরিদল উদ্ধার অভিযানে নামে। পাশাপাশি সাভার থানা ও নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.