মুহিবুল্লাহ হত্যা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে প্রভাব ফেলবে না: সচিব

মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো ধরনের প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

তিনি বলেন, মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই এ ঘটনা প্রত্যাবাসনকে ব্যাহত করতে পারবে না।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে আজ শনিবার (০৯ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকায় যাওয়ার পথে কক্সবাজার বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন সচিব।

পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছি। রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কথা বলেছি অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত মুহিবুল্লার পরিবারের সঙ্গেও। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ক্যাম্পে কোনো ধরনের অনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর জন্যও বিভিন্ন বিষয়ে কাজ চলমান রয়েছে। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবা কার্যক্রম প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘ যুক্ত হয়েছে। আস্তে আস্তে সবকিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকছে।

সচিব জানান, ভাসানচরে এরই মধ্যে ১৬ থেকে ১৭ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে। ওখানে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী নভেম্বর থেকে আবার বাকি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর কার্যক্রম শুরু করা হবে।

দেশীয় গণমাধ্যমের কর্মীদের ক্যাম্পে প্রবেশে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে দুইদিনের সফরের দ্বিতীয় দিনে আজ শনিবার দুপুরে প্রতিনিধি দলটি মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনাস্থল কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ক্যাম্প পরিদর্শন করে।

প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ছাড়াও ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিষয়ক কর্মকর্তা ফায়াজ মুর্শিদ কাজী, পররাষ্ট্র দফতরের মহাপরিচালক মো. আলীমুজ্জামান, সহকারী সচিব শোয়াইব-উল ইসলাম তরফদার।

উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ায় লাম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একদল দুর্বৃত্ত মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে। মুহিবুল্লাহ হত্যার খবরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে কিছুটা অস্থিরতা বিরাজ করছে। তাছাড়া মুহিবুল্লাহ ইস্যুতে সরব অবস্থানে রয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। মুহিবুল্লাহ হত্যা নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনার পাশাপাশি মুহিবুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

মুহিবুল্লাহ আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান ছিলেন। এই সংগঠনের হয়ে তিনি রোহিঙ্গাদের অধিকারের কথা তুলে ধরতেন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের চেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন তিনি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.