মাদক মামলায় পরীমণিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণিসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অন্য দুজন আসামি হলেন- আশরাফুল ইসলাম দীপু ও কবির চৌধুরী।

আজ সোমবার (০৪ অক্টোবর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর চিত্রনায়িকা পরীমণিকে তার হ্যারিয়ার গাড়ি, আইফোন, ল্যাপটপসহ জব্দ ১৬টি আলামত ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

হ্যারিয়ার গাড়ি ছাড়াও জব্দ করা অন্য ১৫টি আলামতের মধ্যে রয়েছে দুটি ল্যাপটপ, তিনটি আইফোন, একটি আইপ্যাড, মেমরি কার্ড একটি, পেনড্রাইভ একটি, টেলিটক মডেম একটি, মাই স্টাইক একটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ভিসাকার্ড একটি, ব্র্যাক ব্যাংকের গোল্ডকার্ড একটি, ব্র্যাক ব্যাংকের ভিসাকার্ড একটি ও দুটি পাসপোর্ট।

এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল দুটি জব্দ তালিকার মোট ১৬টি আলামত পরীমণিকে ফেরত দেওয়ার সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘যদি পরীমণিকে তার থেকে জব্দ আলামত ফেরত দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে তদন্তে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।’

এরও আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে গাড়ি, ল্যাপটপ ও মোবাইলসহ ১৬টি জব্দ আলামত জিম্মায় চেয়ে পরীমণি আবেদন করলে আদালত মালিকানা যাচাই করে তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে পরীমণির জামিন মঞ্জুর করলে পরদিন (০১ সেপ্টেম্বর) গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্ত হন এ চিত্রনায়িকা।

উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট পরীমণির বনানীর বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে মাদকসহ গ্রেফতার করে র‌্যাব-১। এ সময় তার বাসা থেকে বিদেশি মদের খালি বোতল, বোতলভর্তি মদ, ইয়াবা, আইস ও এলএসডি জব্দ করা হয়। পরে বনানী থানায় র‌্যাব-১ তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করে। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।

গ্রেফতার হওয়ার পর পরীমণিকে তিন বার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গ্রেফতারের ২৬ দিন পর গত ১ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান পরীমণি।

এ বছরের জুনের মাঝামাঝি পরীমণি অভিযোগ আনেন ওই মাসের ৯ তারিখ রাতে ঢাকা বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়। এরপর ওই ঘটনায় তিনি মামলা করেন। ওই মামলায় প্রধান আসামি করা হয় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে। পরীমণির করা ওই মামলায় গ্রেফতারও হন নাসির উদ্দিন। পরে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনের জামিন হয় আর মাদক মামলায় গ্রেফতার হন পরীমণি।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পরীমণি ২০১৬ সাল থেকে মাদকসেবন করতেন। এমনকি এলএসডি ও আইসও সেবন করতেন। এজন্য বাসায় একটি ‘মিনিবার’ তৈরি করেন। সেখানে নিয়মিত ‘মদের পার্টি’ করতেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের সরবরাহ করতেন ও পার্টিতে অংশ নিতেন।

২০১৪ সালে সিনেমায় ক্যারিয়ার শুরু করা পরীমণি এ পর্যন্ত ৩০টি চলচ্চিত্র ও বেশ কয়েকটি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। পিরোজপুরের মেয়ে পরীমণিকে চলচ্চিত্র জগতে নিয়ে আসেন প্রযোজক রাজ।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.