‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্থিরতায় বিদেশি সংস্থার সম্পৃক্ততা তদন্ত হচ্ছে’

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিতে কোনো বিদেশি সংস্থা জড়িত কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, আমরা সবকিছু তদন্তের মাধ্যমে বের করে আপনাদের জানাব। কারা এ অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার প্রয়াস পাচ্ছে এবং কোনো বিদেশি সংস্থা এর সঙ্গে জড়িত আছে কি না, সবই আমরা তদন্ত করে দেখছি।

আজ রোববার (০৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এখনো কিছু বলতে পারছি না। আমরা অনেক কিছুই সন্দেহ করছি। তদন্তের পরই আপনাদেরকে জানাব। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে।

তাহলে এটি (মুহিবুল্লাহ হত্যা) বিচ্ছিন্ন ঘটনা কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটিকে বিচ্ছিন্ন বলুন, কিংবা উদ্দেশ্যমূলক বলুন, যাই হোক, আমরা তা বের করব।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে রয়েছে। এ ধরনের মারামারি আপনারা আগেও দেখেছেন। আপনারা দেখেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আগেও মিয়ানমার থেকে বিভিন্নভাবে অস্ত্র এসেছে। এ অস্ত্র নিয়ে এবং আধিপত্য বিস্তার করার জন্য বিভিন্ন গ্রুপে মারামারি দেখা গেছে।

খুন হওয়া আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সোচ্চার ছিলেন বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ওই নেতা মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবসময় সোচ্চার ছিলেন। আমরা মনে করি ঘটনাটি তদন্ত করে এর মূল কারণ বের করতে হবে এবং আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, তাকে যারা হত্যা করেছে বলে আমরা মনে করছি, আমরা তাদের শীগগিরই আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারব। আমাদের তদন্ত, সবকিছুই খুব দ্রুত চলছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা এখন শিথিল হয়ে গেল কীভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা শিথিল হয়নি। আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চতু্র্দিকে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছি, সেটা কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চতুর্দিকে ওয়াচ টাওয়ার করছি সেটাও কিছুদিনের মধ্যে শেষ হবে। রাস্তাঘাট তৈরি করছি। মনে রাখাতে হবে ১১ লাখ লোক সেখানে বাস করে। ১১ লাখ লোক দুটি থানার কিছু অংশে বাস করে। এত বিশাল জনগোষ্ঠীর সবকিছু মেইনটেইন করা খুব সহজ কাজ নয়।

তিনি বলেন, আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনী সমন্বিতভাবে ভালো কাজ করছে বলেই আইন-শৃঙ্খলা এখনও ঠিক রয়েছে। কক্সবাজার একটা পর্যটন এলাকা, সেখানে লাখ লাখ পর্যটক যাচ্ছেন। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ কছে বলেই সব কিছু ভালো অবস্থানে আছে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজ সংগঠনের কার্যালয়ে অবস্থানকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ। এ ঘটনায় পরদিন রাতে উখিয়া থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। যার বাদী নিহত মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিব উল্লাহ। মুহিবুল্লাহ হত্যায় নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছিলেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.