কোভ্যাক্সের আওতায় টিকা পাবে ৪০ শতাংশ মানুষ

দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মানুষের জন্য কোভ্যাক্স থেকে টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও তা বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে। সে হিসাবে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজের পরিবর্তে কোভ্যাক্স থেকে ১৩ কোটি ৬০ লাখ টিকা পাবে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশের ২০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

আজ শনিবার (০২ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শুক্রবার (০১ অক্টোবর) বিকেলে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ট্রেডোস আধানম গাব্রিয়েসুস এর সাথে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের অনুষ্ঠিত দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে এই সম্মতি প্রকাশ করা হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের মধ্যে একটি দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে আজ শনিবার এসব কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈঠকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক আলোচনার প্রথম পর্যায়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় দেশের ২০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। দেশের জনসংখ্যা অনুযায়ী আমরা ৪০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাক্সিন পাঠানোর অনুরোধ জানালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক পর্যায়ক্রমে দ্রুতই ৪০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাঠাতে সম্মত হন।

বিবৃতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ডিসেম্বরের মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় দেশের ২০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাক্সিন পাওয়া সম্ভব হবে এবং খুব অল্প সময়েই দেশের ৪০ ভাগ মানুষের জন্য কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় ভ্যক্সিন পাওয়া যাবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য মাধ্যম থেকেও আমাদের ভ্যাক্সিন ক্রয়ের কাজটিও চলমান থাকবে।

জাহিদ মালেক জানান, দ্বি-পাক্ষিক গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে বাংলাদেশেই ভ্যাক্সিন উৎপাদনের জন্য কারিগরি সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক। পাশাপাশি, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের ভ্যাক্সিন টেস্টিং ক্যাপাসিটি অব দ্যা ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরির এক্রিডিটেশন প্রদানের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করবেন বলেও জানিয়েছেন মহাপরিচালক।

দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে গত দেড় বছরে কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ কি কি উদ্যোগ নিয়েছে তা তুলে ধরলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক কোভিড মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন বলেও বিবৃতিতে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভ্যাকসিন প্রদানে বাংলাদেশের সফলতার কথা উল্লেখ করেন এবং দুটি বড় মাপের সফল ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন করার বিষয়টি তুলে ধরেন। এর মধ্যে গত ২৮ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী ৮০ লক্ষেরও বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে এবং এই কাজে সরকারি, বেসরকারি মিলে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছে বলেও জানান জাহিদ মালেক। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ভ্যাক্সিন প্রদানে বাংলাদেশ নজির সৃষ্টি করেছে বলে জানান ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের নিকট কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাক্সিন আরো বেশি সংখ্যক পাবার অনুরোধ জানালে মহাপরিচালক বিষয়টিতে গুরুত্ব দেবেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন।

বৈঠকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক ছাড়াও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সঙ্গে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব কামরুল হাসান, উপসচিব মো. সাদেকুল ইসলাম ও ঢাকার তেজগাঁও হেলথ কমপ্লেক্স-এর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মফিজুল ইসলাম বুলবুল উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.