যেভাবেই হোক গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে: র‌্যাব ডিজি

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, যেভাবেই হোক কিশোর গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে আনতেই হবে। এটার জন্য দরকার জনসচেতনতা। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে কোনোভাবে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে পারি না।

আজ শনিবার (০২ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) অনুষ্ঠিত হয় ‘কিশোর গ্যাং বৃদ্ধির কারণ’ নিয়ে ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা। বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’। অনুষ্ঠানে র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

র‌্যাব ডিজি বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, জলদস্যুর নির্মূলে আমরা অনেক কাজ করছি। সমাজের মূল ধারায় জলদস্যু ও জঙ্গিবাদে জড়িতদের নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। অনেকে জলদস্যু ও জঙ্গিবাদের পথ থেকে ফিরে এখন স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, আমাদের গর্ব পারিবারিক বন্ধন। পারিবারিক বন্ডিংয়ের কারণে অনেক নেতিবাচক কাজে আমরা জড়াতে পারি না। এরপরও অনেক কিছু ঘটছে। কিশোররা কেন গ্যাং কালচারে জড়াচ্ছে তা খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের সবারই অনেক দায়িত্ব আছে। সবার যথাযথ ভূমিকাটা পালন করতে হবে।

২৭২ জনের বেশি কিশোর গ্যাং সদস্যকে আটকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কিশোর অপরাধীদের এজন্যই গ্রেফতার করতে হয়েছে যাতে কিশোর গ্যাং কালচার, কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে জলদস্যু মুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সুন্দরবনে জলদস্যুতা বন্ধে র‌্যাব অনেক কাজ করছে। সুন্দরবনে এখন সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বিচ্যুত পথে যেতে দেওয়া যাবে না। আভিযানিক কার্যক্রমের পাশাপাশি আমাদের সচেতনতার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, যেখানেই কিশোর গ্যাং কালচার রয়েছে সেখানে কিন্তু আমাদের তরুণ কিশোররা বিপথে পা বাড়াচ্ছে। আমাদের সামাজিক যে স্বাভাবিক আচার-আচরণ, তার বাইরে গিয়ে তারা বিচ্যুত পথে যাচ্ছে। আমরা নিশ্চয়ই মাথা ব্যথার জন্য মাথা কাটা নয়, মাথা ব্যথার ওষুধ দেব। বিচ্ছিন্নতাবোধ থেকে বের হতে হবে। দেশে বই পড়া, খেলাধুলা আমাদের বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য কিন্তু সমাজের নারী-পুরুষ কিশোর-তরুণ সবারই দরকার আছে। সবাই মিলেই আমাদের স্বপ্নের সোনার বাংলা।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আমাদের দেশেও এক সময় বিদেশের লোকজন কাজ করতে আসবে। আগামী ২০ বছরের মধ্যে বিদেশের মতো আমাদের দেশেও একজন ক্লিনিং লেডিও কর্মস্থল থেকে নিজ গাড়িতে সাই করে বাড়ি ফিরবেন।

র‌্যাব ডিজি বলেন, আমাদের কিশোর-তরুণরা যেন গর্বিত নাগরিক হয়, কোনো অপরাধে যেন না জড়ায়- তবেই সুন্দর, উন্নত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব। আমরা যা করতে পারিনি আমাদের আগামী দিনের প্রজন্ম যেন তা করতে পারে সেজন্য সবার ঐকান্তিক চেষ্টা, সহযোগিতা ও সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ছায়া সংসদে স্পিকারের ভূমিকা পালন করেন। বিতর্কে সরকারি দল হিসেবে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ এবং বিরোধী দল হিসেবে সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। সমান নম্বর পাওয়ায় দুই দলকেই যৈথভাবে জয়ী ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মধ্যে ট্রফি প্রদান করা হয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.