‘মাধ্যমিকে বিভিন্ন কাজে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়’

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল ও কলেজ) অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অবাধে চলছে ঘুষ বাণিজ্য। হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেন। এসব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সাড়ে তিন লাখ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হচ্ছে। এ টাকা দিতে হয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, পরিচালনা কমিটিকে।

এমন তথ্য উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর এক গবেষণায়। ‘মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি আজ বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে এমপি বা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির হস্তক্ষেপে সভাপতি মনোনীত করা হয়। এতে অনেকাংশে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সম্পৃক্ত হতে পারে না যা শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। কমিটির সভাপতি/সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতা না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে অশিক্ষিত লোক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এতে করে শিক্ষকদের সঙ্গে কমিটির সদস্যদের কার্যক্রম পরিচালনায় বিভিন্ন সমস্যা ও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।

গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক সুপারিশকৃত সহকারী শিক্ষকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদানে ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়। সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগে ২ থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়।

এসব নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ আদায়েও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে থাকে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) ও কলেজ পরিচালনার দায়িত্বে থাকে গভর্নিং বডির (জিবি) সংশ্লিষ্টরা জড়িত রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে মাধ্যমিক শিক্ষায় নানা ধরনের অনিয়ম, সীমাবদ্ধ এবং ভালোমন্দের চিত্র তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে করণীয় নির্ধারনে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষক তাসলিমা আক্তার। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটি গুণগত গবেষণা। বেশিরভাগ তথ্যদাতা এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুনীতি প্রাতিষ্ঠানিকরণ হয়েছে। তারা আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ গবেষণার সুপারিশগুলোর বিষয়ে গুরুত্ব দেবেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টিআইবির পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.