গ্রিন প্রজেক্টে অর্থায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি: আনোয়ারুল ইসলাম

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, পুঁজিবাজার উন্নয়েনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে কমিশন। করোনা মহামারিতেও সূচক ৭০০০ পয়েন্টের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এছাড়াও বিএসইসি বর্তমানে বিভিন্ন গ্রিন প্রজেক্টে অর্থায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

নেদারল্যান্ডভিত্তিক গ্লোবাল রিপোর্টিং ইনিশিয়েটিভ (জিআরআই) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

জুম প্লাটফর্মে গত ১৪-২১ সেপ্টেম্বর ‘Preparing a sustainability report’ শীর্ষক টেকনিক্যাল সিরিজের দ্বিতীয় ব্যাচের এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সাসটেইনেবিলিটি অর্থনৈতিক সেক্টরে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে সরকারি পর্যায় থেকে বিভিন্ন আইন-কানুন তৈরি করা হয়েছে। আর সাসটেইনেবিলিটি রির্পোটিং এর মানদণ্ডসমূহ পরিপালনের মাধ্যমে কোম্পানিগুলো উপকৃত হচ্ছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জন করেছে। একই সাথে ২০৩০ সালের মধ্যে সাসটেইনেবল গোল অর্জনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূঁইয়া বলেন, ডিএসই ও জিআরআই ২০১৮ সাল থেকে একসাথে পথ চলা শুরু করে। যেহেতু আমাদের সম্পদ সীমিত, এই সীমিত সম্পদকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে টেকসই উন্নয়ন করা যায় এ বিষয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, জিআরআই ও ডিএসই’র যৌথ উদ্যোগে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উন্নয়ন আরও টেকসই করতে হবে। এর ফলে পুঁজিবাজার ও দেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে। আগামী এক বছরের মধ্যে কোম্পানিগুলো যাতে জিআরআই-এর মানদণ্ড অনুযায়ী সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারে এ জন্য তিনি তালিকাভুক্ত এবং একই সাথে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

প্রশিক্ষণ কর্মশালার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ আল-আমিন রহমান জানান, ২০১৯ সালে এ বিষয়ক ১ম কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল যাতে ৪১টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির ১৫০ জন সিনিয়র কর্মকর্তা উপস্থিত হয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন এবং অধিকাংশই তাদের প্রাথমিক রির্পোট প্রকাশ করেছেন। এবার ৪২টি কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কর্মশালায় যুক্ত হয়েছেন।

কর্মশালায় জিআরআই সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টিং এর সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা করেন মাহিন্দ্রা গ্রুপের চিফ সাসটেইনেবিলিটি অফিসার অনির্বাণ ঘোষ। এতে কিভাবে মাহিন্দ্রা গ্রুপ তথা ভারত লাভবান হচ্ছে, সে বিষয়েও আলোকপাত করেন তিনি। বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানির সিনিয়র অফিশিয়ালরা যাতে জিআরআই এর গবেষণালব্ধ উপকরণসমূহের যথাযথ ব্যবহার করে কোম্পানির সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট তৈরি ও প্রকাশ করেন সে বিষয়ে তিনি আহ্বান জানান।

কর্মশালার ২য় দিনে জিআরআই এর মানদণ্ড অনুযায়ী সাসটেইনেবিলিটি রির্পোট প্রকাশ ও জলবায়ু রিপোর্টিং বিষয়ক পদ্ধতি সমূহ নিয়ে জিআরআই এর দক্ষিণ এশিয়ার ম্যানেজার রুবিনা পালের পরিচালনায় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন- মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের হেড অফ সাসটেইনেবিলিটি তাহমিনা জামান খান, জিআরআই সাউথ এশিয়া পল্লভী আত্রে ও ভিএনভি এডভাইজরি সন্দিপ রায় চৌধুরী।

কর্মশালার সমাপনী দিন ২১ সেপ্টেম্বর আগের সার সংক্ষেপ তুলে ধরা হয় এবং রিপোর্টিং প্রসেস সম্পর্কে আলোচনা করেন রুবিনা পাল, ম্যানেজার, জি আর আই সাউথ এশিয়া ও মো. রফিকুল ইসলাম, ম্যানেজার, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস, এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড।

পরবর্তীতে, ডিমিসটিফাই সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টিং শীর্ষক সেশনে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন কুমারাস্বামী চন্দ্রাশেখরা, হেড অফ সাসটেইনেবিলিটি, ইন্ডিয়া, বিএসআই; মোহাম্মাদ জাহিদুল্লাহ, চিফ সাসটেইনেবিলিটি অফিসার, ডিবিএল; পূজা সাহা, সহকারী ব্যবস্থাপক, ইএইচএস অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি, আইটিসি।

টেকনিক্যাল সিরিজের সমাপণী সেশন পরিচালনা করেন ডিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক, হেড অব প্রোডাক্ট এন্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ও জিআরআই-ডিএসই’র কার্যক্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দ আল-আমিন রহমান। তিনি সকল অংশগ্রহণকারীদের অভিবাদন জানিয়ে বলেন, এই উদ্যোগটি সকল পক্ষের জন্য প্রাসঙ্গিক এবং উপকারী এবং সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টিং এর ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সমাপণী সেশনে বক্তব্য প্রদান করেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূইয়া ও আসথিলদুর জুলিতাদত্তির, এরিয়া কর্মকর্তা, জিআরআই, অস্ট্রেলিয়ান হাই-কমিশন টু বাংলাদেশ এর সেকেন্ড সেক্রেটারি ডানকান ম্যাককুলগ।

বক্তারা তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টিং এর গুরুত্ব ও সুবিধাসমূহ তুলে ধরেন যার প্রেক্ষিতে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, উপস্থিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তাদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় অচিরেই জিআরআই এর মানদণ্ড অনুযায়ী সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট প্রকাশে সক্ষম হবে।

টেকনিক্যাল সিরিজের ওয়ার্কশপ শেষে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.