নিউইয়র্কে আ.লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ থামাতে নাজেহাল পুলিশ

জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশিদের ব্যবসাকেন্দ্র খ্যাত জ্যাকসন হাইটস এলাকায় বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ভীত সন্তস্ত্র হয়ে পড়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সামাল দিতে নাজেহাল হয়ে পড়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সফরের পক্ষে ও বিপক্ষে শনিবার দিনভর কর্মসূচি চলার সময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় জ্যাকসন হাইটস। এ সময় দফায় দফায় হামলা, পাল্টা হামলা, ধাক্কা-ধাক্কি আর কিল-ঘুষির ঘটনা ঘটেছে।

এদিন একদিকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ এবং আরেকদিকে বিএনপি, যুবদল, জাসাসের নেতা-কর্মীরা নিজ নিজ ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে পরস্পরবিরোধী স্লোগানের মধ্যদিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন। তখনই দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। তবে উভয় পক্ষই পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে আক্রমণাত্মক স্লোগান দিতে থাকে। এর ফলে সন্ধ্যা সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা নাগাদ পুরো এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

জানা গেছে, বিকালে ডাইভার্সিটি প্লাজায় নিউ ইয়র্ক স্টেট বিএনপির উদ্যোগে ‘যেখানে হাসিনা-সেখানেই প্রতিরোধ’ কর্মসূচি চলাকালে আওয়ামী লীগের একদল কর্মী সেখানে হামলার চেষ্টা করে। এ সময় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি বেশি দূর গড়াতে পারেনি। এর ঘণ্টা দেড়েক পর ডাইভার্সিটি এলাকা থেকে শেখ হাসিনাকে নিউ ইয়র্কে ‘শুভেচ্ছা-স্বাগত’ স্লোগানে যুবলীগের একটি র‌্যালি ৭৩ স্ট্রিট দিয়ে ৩৭ এভিনিউর দিকে যাওয়ার সময় আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা বিএনপি নেতা-কর্মীরা শেখ হাসিনাকে প্রতিহত করার স্লোগান দেন। এরপর র‌্যালিটি এলাকা প্রকম্পিত করে ‘বিএনপি-জামায়াত প্রতিরোধে’র স্লোগান দিতে দিতে ৩৭ এভিনিউর কর্নারে যাওয়ার পরই রাস্তার অপর পাশে বিএনপির মানববন্ধনের সঙ্গে সংঘাত বেধে যায়।

উভয় পক্ষের শত শত নেতা-কর্মী-সমর্থক প্রথমে উত্তপ্ত বাক্য-বিনিময়, এরপর ধাক্কা-ধাক্কি থেকে মারপিটে লিপ্ত হন। যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা ‘যেখানে রাজাকার-সেখানেই প্রতিরোধ’ স্লোগানে ঝাঁপিয়ে পড়েন বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধ্বস্তাধস্তি দেখে জ্যাকসন হাইটস এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তুমুল হট্টগোলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা বুঝে উঠতে পারছিলেন না সেখানে কী ঘটছে। এই অপ্রীতিকর ঘটনায় এলাকার বাসিন্দারা ভয়ে পুলিশকে ফোন করেন।

জ্যাকসন হাইটসের বাসিন্দা স্যামুয়েল স্টিফেন জানান, প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে ৭৩ স্ট্রিটের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তার মতে, এখানে বাংলাদেশিরা মারামারিতে লিপ্ত হয়, যা কাম্য নয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.