শেষ হলো সংসদ অধিবেশন

করোনাকালের আরো একটি সংসদ অধিবেশন সমাপ্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ৭ কার্যদিবস শেষে অধিবেশন সমাপ্তি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির আদেশ পড়ে শোনান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এর আগে অধিবেশনে সমাপনী ভাষণ দেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

অধিবেশন সমাপনীর আগে ১৯৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণের ভিডিওচিত্র অধিবেশন কক্ষের স্ক্রিনে দেখানো হয়। একাদশ সংসদের চতুর্দশ অধিবেশন গত পহেলা সেপ্টেম্বর শুরু হয়। দুইজন সংসদ সদস্য মারা যাওয়ার কারণে অধিবেশন দুই দফা মুলতবি করা হয়। সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফের মৃত্যুতে প্রথমদিনের বৈঠক এবং হাসিবুর রহমান স্বপনের মৃত্যুতে পরদিন ২ সেপ্টেম্বরের বৈঠক মুলতবি করা হয়। টানা ৯ দিন বিরতির পর ১৪ সেপ্টেম্বর সংসদ বসলেও জাতীয় পার্টির (জাপা) সংরক্ষিত আসনের এমপি অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী মারা যাওয়ায় সংসদের রীতি অনুযায়ী এদিন অন্যান্য কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। শোক প্রস্তাবের আলোচনার পর মুলতবি হয় সংসদ।

চলতি অধিবেশন মাত্র চার কার্যদিবস চালিয়ে ৪ সেপ্টেম্বর শেষ করার পরিকল্পনা থাকলেও সংসদে শোক প্রস্তাব গ্রহণের কারণে সেটা বাড়াতে হয়। এই অধিবেশনে কার্যদিবস ছিলো সাতটি। ৯টি বিল পাস হয়। চারটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি তাদের প্রতিবেদন সংসদে উপস্থাপন করে। অধিবেশনে ৭১ বিধিতে ৩১টি নোটিস পাওয়া যায়, যার মধ্যে একটিও আলোচনা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দেওয়ার জন্য মোট ২৪টি প্রশ্ন পাওয়া যায় যার মেধ্য তিনি জবাব দেন ১৬টির। অন্যমন্ত্রীদের জন্য প্রশ্ন জমা পড়ে ৫৮৪টি। মন্ত্রীরা ৩৮৯টি প্রশ্নের জবাব দেন।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা মহামারিকালের অন্য অধিবেশনগুলোর মতো এবারও সীমিত সংখ্যক সংসদ সদস্য অংশ নেন। করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া সংসদ সদস্যরাই সংসদের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে এবার শুক্রবারও জাতীয় সংসদের বৈঠক বসে।

করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন থেকে প্রায় দেড় বছর হারিয়ে যাওয়ায় এবং সরকারি অনেক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছর করার প্রস্তাবটি বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

সংসদ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, কোভিট-১৯ এর কারণে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ ছিল। এখন মাত্র এক বছরের জন্য প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমার ক্ষেত্রে প্রায় দুই বছর ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ছাড় দেওয়া হয়েছে শুধু এককালীন। মানে শুধু এ বছরের জন্য। তাও বিসিএস ক্যাডারকে বাদ দিয়ে।

বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন, কোভিটজনিত কারণে কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা তৈরি হয়েছিল। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার পর আংশিক খুলে দেওয়া হয়েছে এবং শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, করোনা বেড়ে গেলে যেকোনো সময়ে এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত হয়তো দুই বছর পর্যন্ত শিক্ষাজীবন ঝরে যাবে। তাহলে প্রশ্ন আসে, যারা পাস করে বেরোনোর পর পাঁচ বছর সময় পায় চাকরি করার জন্য। কিন্তু দুই বছর যদি চলে যায়। আর এখন শিক্ষা ব্যবস্থা বন্ধ করতে হয়, তাদের পাস করতে করতেই ৩০ বছর চলে যাবে। তাই চাকরির বয়স ৩২ করা যায় কি-না সেটা বিবেচনা করা উচিত।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.