বনানীর বিতর্কিত পরিদর্শক সোহেল রানা বরখাস্ত

গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ই-অরেঞ্জের’ প্রধান সমন্বয়ক বনানী থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) শেখ সোহেল রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম এক আদেশে তাকে বরখাস্ত করেন। সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আসাদুজ্জামান।

এর আগে গুলশান বিভাগের ডিসি ডিএমপি কমিশনার বরাবর একটি লিখিত চিঠি দেন। সেখানে তিনি (ডিসি) সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলার পাশাপাশি তিনি যে ভারতে পালিয়ে গেছেন সেই বিষয়টি উল্লেখ করেন। এরপরই বনানী থানার এই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এদিকে রোববার ডিএমপির বিভিন্ন থানার ২১ পরিদর্শককে রদবদল করা হয়। সেখানে বনানী থানার দুই পরিদর্শককে বদলি করা হয়েছে। সোহেল রানার জায়গায় ওসি তদন্ত হিসেবে নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন উত্তর পূর্ব থানার পরিদর্শক আলমগীর গাজী এবং পরিদর্শক (অপারেশনস) এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইসরাফীল হোসেন ভুঁইয়াকে।

গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় বনানী থানা পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তাকে ভারত-নেপাল সীমান্ত থেকে আটক করেছে বিএসএফ। শুক্রবার ওই সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া আদালতের নির্দেশে সোহেল রানার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় একটি প্রতারণার মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তাকে দশ নম্বর আসামি করা হয়।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, সোহেল রানার বিরুদ্ধে যেহেতু ভারতে মামলা হয়েছে এ কারণে তাকে ফিরিয়ে আনা যাবে কি না সেটি নিশ্চিত না। তবে ফিরিয়ে আনার রাস্তা রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিএসএফকে চিঠি দিয়ে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এটি অনেক সময় করা হয়। আমরা চেষ্টা করছি ফিরিয়ে আনার জন্য। যদি এই মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হয় তাহলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে ফেরত আনার চেষ্টা করবে।

২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করা অনলাইন শপ ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রাহকরা টাকা নিয়ে সময়মত পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ করেছেন। গত ১৭ আগস্ট অগ্রিম অর্থ পরিশোধের পরও মাসের পর মাস পণ্য না পাওয়ায় ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা করেন প্রতারণার শিকার গ্রাহক মো. তাহেরুল ইসলাম। মামলার আসামিরা হলেন ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, আমানউল্ল্যাহ, বিথী আক্তার, কাউসার আহমেদ এবং পুলিশের বনানী থানার পরিদর্শক সোহেল রানা।

শুরু থেকেই ই-অরেঞ্জের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন তিনি। তবে অরেঞ্জ বাংলাদেশ নামে প্রতিষ্ঠান খুলতে নেওয়া টিআইএন সনদে পরিচালক হিসেবে সোহেল রানার নাম দেখা যায়। প্রতিষ্ঠানটি থেকে বিভিন্ন সময়ে আড়াই কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.