আন্দোলনের জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান ফখরুলের

সরকার হটানোর আন্দোলনের জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে যদি আমরা মুক্ত করতে না পারি, আওয়ামী লীগকে যদি সরাতে না পারি, তাহলে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবো না, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকেও মুক্ত করতে পারবো না। হাজার হাজার মানুষ যে মিথ্যা মামলা নিয়ে বসে আছি, আমরাও মুক্ত হতে পারবো না। সেজন্য আমি আগাম আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) এক অনুষ্ঠানে নেতা-কর্মীদের প্রতি বিএনপির মহাসচিব এই আহ্বান জানান। রাজধানীর গোরানে ফ্রেন্ডস কনভেনশন সেন্টারে ঢাকা-১০ আসনের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে ‘করোনা হেল্প সেল’ এর উদ্বোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।

ফখরুল বলেন, ‘আমাদেরকে রাস্তায় নামতে হবে, রাস্তায় নেমে আসতে হবে, সোচ্চার হতে হবে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ সরকারকে পরাজিত করতে হবে। তাদেরকে বাধ্য করতে হবে— নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় দেশে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়ার জন্য। যাতে জনগণ ভোট দিয়ে তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে, সরকার গঠন করবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন আমাদেরকে উঠে দাঁড়াতে হবে। আমরা ১০/১২ বছর ধরে সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি। আমাদের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমাদের পাঁচশোর বেশি ভাই গুম হয়ে গেছে, আমাদের হাজারের উপরে মানুষ খুন হয়ে গেছে, আমাদের অনেককে হাটুতে গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে …।’

তার মন্তব্য, ‘সুতরাং, আন্দোলন ছাড়া আমাদের কোনও বিকল্প নেই। একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার জন্য, আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবার জন্য, আমাদেরকে উঠে দাঁড়াতে হবে। বিশেষ করে তরুণ যু্বক যারা আছেন, তাদেরকে জেগে উঠতে হবে। পরিবর্তন আসে সবসময় তরুণদের মাধ্যমে— তাদের নেতৃত্বে, তাদের বীরত্ব ও তাদের সাহসিকতার মধ্য দিয়ে। এখন কাজ করতে হবে তরুণ-যুবকদের।’

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই করোনা নিয়ে দেশে রাজনীতি হচ্ছে, এই করোনা নিয়ে ব্যবসায়িক রাজনীতি হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় রাজনীতি হচ্ছে, জাতীয় রাজনীতি হচ্ছে। আমরা করোনা নিয়ে কোনও রাজনীতি করতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘আর করোনা নিয়ে রাজনীতি নয়, টিকা নিয়ে রাজনীতি নয়। আমি আজকে আহ্বান জানাবো— আসুন, সবাইকে নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করে এই করোনাকে প্রতিহত করি। অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশে কিন্তু খুব খারাপ অবস্থা হয়নি। আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবো যে, ভেবে চিন্তে দেখেন। মানুষকে মরতে দেওয়া যাবে না। শুধু লকডাউন দিলে শেষ হয়ে যাবে না, লকডাউন দিয়ে গরিব মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।’

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও খিলগাঁও থানা সভাপতি ইউনুস মৃধার পরিচালনায় সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিব, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু বক্তব্য রাখেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.