সংঘর্ষের পর বরিশাল থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৮ আগস্ট) দিবাগত রাত থেকে বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণসহ দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের আবর্জনা পরিবহনের গাড়ি দিয়ে সদর উপজেলা সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটার বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে। এতে ওই সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

ব‌রিশাল জেলা বাস, মি‌নিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্র‌মিক ইউনিয়‌নের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস জানান, মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে লক্ষ্য করে আনসারদের গুলি বর্ষণের বিচার চেয়ে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আমার ড্রাইভার ও কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবু হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমরা এর বিচার চাই।

বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও মহানগর যুবলীগের সদস্য মমিন উদ্দিন কালু জানান, রাতে আনসার সদস্যদের গুলিতে এবং পুলিশের লাঠিচার্জে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে অভ্যন্তরীণসহ দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

তবে বরিশাল নৌযান শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি মাস্টার আবুল হাশেম বলেন, সকাল থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচল করছে। ঢাকা থেকেও লঞ্চ এসেছে। এখন পর্যন্ত (সকাল ৯টা) লঞ্চ চলাচল বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত আমার জানা নেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০ থেকে ২৫ জন কর্মচারী নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডে উপজেলা পরিষদ এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার শুভেচ্ছা ব্যানার অপসারণের কাজ শুরু করে। এ সময় ইউএনওর কার্যালয় ও সরকারি বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা তাদের পরিচয় জানতে চান। এরপর তারা সকালে এসে কাজ করার জন্য বলেন। এ সময় সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বাগবিতণ্ডা হয়।

খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী সেখানে যান। পরে সেখানে আনসার সদস্যদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহও সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় নেতাকর্মীরা ইউএনওর বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ছোড়েন আনসার সদস্যরা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মুনিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শোক দিবস উপলক্ষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের ব্যানার ও পোস্টার লাগানো ছিল। রাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসব ছিঁড়তে আসে। রাতে লোকজন ঘুমাচ্ছে জানিয়ে তাদের সকালে আসতে বলা হয়। এ কারণে তারা আমাকে গালিগালাজ করে। আমার বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায়।

মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, ছররা গুলি করা হয়েছিল। আমার গায়ে লেগেছিল, ব্যথা পেয়েছি। আমার গায়ে জ্যাকেট ছিল। সে সময় সঙ্গের লোকেরা আমাকে সুরক্ষা দিয়েছেন। তাদের গুলি লেগেছে। অনেকেই আহত হয়ে থাকতে পারেন। তবে কতজন, জানি না।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.