পুনর্গঠন হতে পারে অ্যাক্টিভ ফাইনের পর্ষদ, চলবে বিশেষ নিরীক্ষা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রাসায়ন খাতের কোম্পানি অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালসের (এএফসি) বিরুদ্ধে হিসাবকারসাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে সর্বশেষ দুই হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদের তথ্য নিয়ে নানা সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির পণ্য বিক্রিতে প্রবৃদ্ধি হলেও নিট মুনাফা বাড়েনি। উল্টো মুনাফায় ধস নেমেছে।

অন্যদিকে কোম্পানির পরিচালকরা ও স্পন্সররা ন্যুনতম শেয়ার ধারণের শর্তও লংঘন করে চলেছেন। তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে উদ্যোক্তাদের সম্মিলিতভাবে ন্যুনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করার আইনী বাধ্যবাধকতা থাকলেও অ্যাক্টিভ ফাইনের উদ্যোক্তারা ধারণ করছেন মাত্র ১০.০৪ শতাংশ শেয়ার।

সব মিলিয়ে লাইনচ্যুত কোম্পানিটিকে সঠিক লাইনে ফেরানোর উদ্যোগ নিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর অংশ হিসেবে কোম্পানিটির সর্বশেষ ২ হিসাববছরের আর্থিকবিবরণীর উপর বিশেষ নিরীক্ষা চালানো হবে। এছাড়া কোম্পানিটির পর্ষদ পুনর্গঠন করা হতে পারে।

বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

শিগগিরই কমিশন একটি চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি ফার্মকে বিশেষ নিরীক্ষার দায়িত্ব দিয়ে চিঠি ইস্যু করবে। তবে কোন প্রতিষ্ঠানকে এই দায়িত্ব দেওয়া হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

এদিকে কোম্পানির পরিচালকরা ন্যুনতম শেয়ার ধারণের শর্ত লংঘন করতে থাকলে বিএসইসি বিদ্যমান পর্ষদ ভেঙ্গে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করতে পারে, যেখানে কয়েকজন স্বতন্ত্র পরিচালক মনোনয়ন দেওয়া হবে।

২০১০ সালে পুঁজিবাজারে আসা এই কোম্পানিটির পারফরম্যান্স শুরুর দিকে ভাল থাকলেও গত কয়েক বছরে তার বেশ অবনতি। ওষুধ তৈরির মৌলিক কাঁচামাল (Active Pharmaceuticals Ingredient-API) ও নানা ধরনের রাসায়নিক পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিটির সর্বশেষ হিসাববছরে (২০১-২০) লোকসান দিয়েছে। নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও কোম্পানিটি এখনো ওই বছরের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করেনি। বকেয়া এই এজিএম অনুষ্ঠানে হাইকোর্টের অনুমোদন চাওয়া হবে সম্প্রতি জানিয়েছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান তাদের কোয়ালিফাইয়েড ওপিনিয়নে ওই প্রতিবেদনের বেশ কিছু অসঙ্গতি তুলে ধরেছে।

২০১০ সালে তালিকাভুক্ত হয় অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালস। গত ২০ বছরে কোম্পানিটি মাত্র ২ বছর নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, যার মধ্যে ২০১৬ সালে ৫ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে ২ শতাংশ। বাকী বছরগুলোতে টাকা বোনাস দিয়ে পরিশোধিত মূলধনের আকার পাহাড়ের মত বিশাল করে তুলেছে।

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.