করোনার শুরুতে মানুষের যে ভীতি ছিল, এখন আর তা নেই: তথ্যমন্ত্রী

মানুষের মধ্যে করোনার শুরুতে যে ধরনের ভয় ছিল তা এখন আর নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, আমার নিজের সুরক্ষা আমাকেই দিতে হবে। আমার সুরক্ষা অন্য কেউ দিতে পারবে না। এজন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানাবো, আমরা সবাই যেন সরকারের নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি।

আজ সোমবার (২৬ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

লকডাউন মানতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, মানুষের মধ্যে করোনার শুরুতে যে ধরনের ভীতি ছিল সে ভীতিটা এখন আর নেই। গত এক বছর গ্রামে করোনা না ছড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামের মানুষের মধ্যে একটি ধারণা জন্মেছিল গ্রামে কখনো করোনা আসবে না। কিন্তু এখন শহরের হাসপাতালে যে রোগীগুলো ভর্তি হচ্ছে তার ৭০ ভাগ রোগী গ্রাম থেকে আসছে। এখন সারাদেশে করোনা ছড়িয়েছে। এজন্য সবাইকে অনুরোধ জানাবো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে। নিজের স্বার্থেই লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রয়োজন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জনমত উপেক্ষা করে একটা একগুয়েমি সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার দিন দিন হিংস্র হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে জনগণের ভোগান্তি বেড়েছে’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আসলে অতীতে বাংলাদেশে বিএনপি হিংস্রতা দেখিয়েছে। বিশেষ করে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে যেভাবে মানুষকে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়েছে। বহু মানুষকে ঝলসে দেওয়া হয়েছে, অনেকেই পঙ্গু হয়ে গেছে। এই হিংস্রতার রাজনীতি বাংলাদেশ এর আগে কখনো দেখেনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা নিজেরা হিংস্রতার রাজনীতি করেন। এজন্য এ কথাগুলো বলেন।

‘সরকার এক দলীয় শাসন কায়েমের অভিপ্রায় নিয়ে দেশ শাসন করছে। এজন্য বিএনপি ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে’, বিএনপির এমন মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, এখন যদি লকডাউনের মধ্যে কেউ ফৌজদারি অপরাধে গ্রেফতার হয়, তাহলে তিনি যদি কোনো দল করেন এবং তিনি যদি ফৌজদারি মামলার আসামি হন তাকে কি গ্রেফতার করা যাবে না? আমার প্রশ্ন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা ফৌজদারি আসামির পক্ষ কেন নেন?

তিনি বলেন, যেকোনো রাজনীতিবিদ যদি ফৌজদারি মামলার আসামি হন আইন এবং আদালত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আইন এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের ফৌজদারি অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুতরাং এখানে রাজনীতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

লকডাউন নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কথা বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, লকডাউন দেওয়ার আগে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল দেশে কঠোর লকডাউন দেওয়া দরকার। আবার লকডাউন দেওয়ার পর বলছে, এ লকডাউন অপরিকল্পিত। তাহলে তাদের মতে পরিকল্পিতটা কি সেই প্রেসক্রিপশনটা একটু দিক না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আজকে প্রায় দেড় বছর করোনা। এ সময়ে দেশের খেটে খাওয়া একজন মানুষও অনাহারে মৃত্যুবরণ করেনি এবং দেশে কোনো হাহাকার নেই। তবে অনেকের সাময়িক অসুবিধা হয়েছে। সরকারের ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতার কারণে মানুষের মধ্যে কোনো হাহাকার নেই। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমাদের দলের সর্বস্থরের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই অসুবিধা সাময়িক। সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মেনে চলে তাহলে লকডাউন প্রলম্বিত করতে হবে না।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.