‘ভবনে পানি জমিয়ে রাখলে আইনগত ব্যবস্থা’

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‌‌‌‘সরকারি-বেসরকারি নির্মাণাধীন, পরিত্যক্ত বা যেকোনও ভবনে পানি জমিয়ে রেখে ডেঙ্গু প্রজননে সহায়ক ভূমিকা রাখলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি জানান, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দুই-এক দিনের মধ্যেই ঢাকার উভয় সিটি করপোরেশনে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে জোরালোভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। আগামী সোমবার এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জরুরি সভা ডাকা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘নির্মাণাধীন ও পরিত্যক্ত ভবন অথবা বাসার ছাদ, আঙিনা, ফুলের টব, ফ্রিজ-এয়ারকন্ডিশনে কোনও অবস্থাতেই যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কারণ তিন দিনের বেশি জমানো পানিতে মশা প্রজনন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।’

নির্মাণাধীন ও পরিত্যক্ত ভবনই হচ্ছে এডিস মশার প্রজননের প্রধান ঊর্বর জায়গা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘জমানো পানিতে লার্ভিসাইড অথবা ১০ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গায় আড়াইশ’ গ্রাম কেরোসিন ঢেলে দিয়ে মশার প্রজনন ধ্বংস করা সম্ভব।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষকে বার বার এসব বিয়য়ে সচেতন করার পরও অনেকে আমলে নিচ্ছেন না। তাই উভয় সিটি করপোরেশনে ১০ জন করে ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করা হয়েছে এবং আগামীকাল থেকে তারা অভিযান পরিচালনা করবে। যারা নির্দেশনা অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন এবং জরিমানা করবেন।’

সরকারি নির্দেশনা অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানও মানছে না এমন এক প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি বা বেসরকারি যে প্রতিষ্ঠানই হোক নির্মাণাধীন বা পরিত্যক্ত অথবা ব্যবহার করা ভবন যেখানেই হোক, পানি জমিয়ে রেখে এডিস মশা প্রজননে ভূমিকা রাখলে আইন আনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণের জান-মাল ক্ষতিগ্রস্ত করার কোনও অধিকার আমার, আপনার কারোরই নেই।’

তিনি জানান, ২০১৯ সালের ডেঙ্গুর ভয়াবহতার তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ায় ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছিল। এ বছরও মন্ত্রণালয় থেকে পর্যাপ্ত লোকবল, কীটনাশক, ফগিং মেশিন এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করা হয়েছে।’

তাজুল ইসলাম আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। জনগণকে এ ব্যাপারে সচেতন করার জন্য ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে।’ উভয় সিটি করপোরেশনের মেয়র অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রী নিজে অনেক নির্মাণাধীন ভবন, বাসা-বাড়ি পরিদর্শন করেছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘এখন দরকার মানুষের সচেতনতা। সচেতন না হলে প্রতিরোধ করা কঠিন হবে। শুধু অভিযান চালিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’

উল্লেখ্য, এ বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত মোট ৫৩৬ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। উত্তর সিটি করপোরেশনের তুলনায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এডিস মশার প্রকোপ একটু বেশি বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.