বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান মুহিত কারাগারে

নিজ প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ৬৬ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্য প্রতিষ্ঠান বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিতকে। আজ বুধবার (৩০ জুন) আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

মঙ্গলবার ভোরে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটককৃত মুহিতকে আজ বুধবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে হাজির করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আতিকুল আলম আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

উল্লেখ, চলতি জুন মাসের মাঝামাঝি ডিএসইর এক পরিদর্শনে বানকো সিকিউরিটিজে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ৬৬ কোটি টাকার ঘাটতি পাওয়া যায়। এ ঘটনায় গত ১৪ জুন প্রতিষ্ঠানটির লেনদেন স্থগিত করা হয়। একই দিনে মতিঝিল থানায় বানকো সিকিউরিটিজ ও এর পরিচালকদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে ডিএসই। মামলায় মুহিত ছাড়া আর যাদের আসামী করা হয়েছে, তারা হচ্ছেন- বানকো সিকিউরিটিজের পরিচালক মো. শফিউল আজম, ওয়ালিউল হাসান চৌধুরী, নুরুল ঈশাণ সাদাত, এ মুনিম চৌধুরী, জামিল ও আহমেদ চৌধুরী। ঘটনাটি আর্থিক প্রতারণার বিষয় হওয়ায় তা দুদকে হস্তান্তর করে মতিঝিল থানা।

অন্যদিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ  কমিশন (বিএসইসি) সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অনুরোধ করে, বানকোর কোনো কর্মকর্তাকে যেন দেশত্যাগের অনুমতি দেওয়া না হয়।

এর মধ্যেই গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ না করে গতকাল ভোরে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বানকোর চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিত। সেখানে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। পরে তাকে দুদকের কাছে হস্তান্তর করলে দুদকের মামলায় আটক দেখিয়ে তাকে রমনা থানার হেফাজতে রাখা হয়।

গতকাল বিমানবন্দরে মহিত আটক হওয়ার পর ডিএসইর অনুরোধে দুদক বানকো সিকিউরিটিজের ঘটনায় একটি মামলা করে। এই মামলায় বলা হয়, অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার আশ্রয়ে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্ট থেকে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকা আত্মসাতের দায়ে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪২০, ১০৯ ধারায় একটি মামলা রুজুর জন্য অনুরোধ জানানো হলো। মামলার তদন্তের সময় ঘটনার সঙ্গে অন্য কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আইন আমলে নেয়া হবে বলেও জানানো হয়।

ওই মামলার পর মুহিতের বিরুদ্ধে ওয়ারেট ইস্যু করা হয়। বিকালে দুদকের একটি দল ওই ওয়ারেন্ট নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে যায়। সেখান সকল হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষে করে বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিতকে নিয়ে রাত ৮টার দিকে দুদক কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ১০টার দিকে তাকে রমনা মডেল থানার কাস্টডিতে দেওয়া হয়।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.