খাদ্য নিরাপত্তায় ৬টি থিম্যাটিক এরিয়ায় কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি অর্জনে সরকার ছয়টি থিম্যাটিক এরিয়াতে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমরা কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি অর্জনে ছয়টি থিম্যাটিক এরিয়াতে কাজ করে যাচ্ছি— (১) কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন, (২) কৃষি উপকরণ সরবরাহ, (৩) কৃষি সম্প্রসারণ, (৪) সেচ কাজে পানির সাশ্রয়ী ব্যবহার, (৫) জলবায়ুর পরিবর্তন জনিত প্রভাব মোকাবিলা এবং (৬) প্রতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন।

আজ রোববার (২৭ জুন) সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২৪ প্রদান অনুষ্ঠানে (ভার্চ্যুয়াল) প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আজ বিশ্বে বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, চা উৎপাদনে চতুর্থ এবং আলু ও আম উৎপাদনে সপ্তম স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

কোন এলাকায় কোন ফসল ভালো হবে তা নির্ধারণে মাটি ও আবহাওয়া নিয়ে গবেষণা এবং সফলতার কথা তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, পতিত জমি ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছি, ৮০ হাজার হেক্টর অতিরিক্ত জমি চাষাবাদের আওতায় নিয়ে এসেছি। ৮ লাখ ৮০ হাজার কৃষককে সবজি-পুষ্টি বাগান ও শষ্য বহুমুখীকরণের প্রশিক্ষণ দিয়েছি।

কীটনাশকমুক্ত শাক-সবজির যোগান দিতে ৪১টি জেলায় ‘কৃষকের বাজার’ চালু করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

রফতানিমুখী পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, শ্যামপুরে একটি ফাইটো-স্যানেটারি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছি, যা রফতানিমুখী কৃষি পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

সার্ক সিড ব্যাংক স্থাপনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। দেশি ফলের উন্নত জাত সম্প্রসারণের পাশাপাশি বিদেশি ফলের চাষাবাদও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

কৃষকদের জন্য ভুর্তকি দিয়ে সার সরবরাহ করার কথা উল্লেখ করে টানা তিনবারের সরকারপ্রধান বলেন, আমরা সারের মূল্য ৪ দফায় কমিয়ে বর্তমানে প্রতি কেজি ইউরিয়া ১৬ টাকা, টিএসপি ২২ টাকা, ডিএপি ১৬ টাকা এবং এমওপি ১৫ টাকায় ধার্য করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আমলে কৃষকদের সারের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে গুলি খেয়ে মরতে হয়েছে। আমরা বলেছিলাম- আওয়ামী লীগ সরকারে আসলে কৃষকদের সারের জন্য গুলি খাওয়া তো দূরের কথা, সারের জন্য দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হবে না। সার প্রত্যেক কৃষকের ঘরে পৌঁছে যাবে। আমরা সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেই।

তিনি বলেন, সেই সময় আমরা স্লোগান তুলেছিলাম— কৃষক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও। আমাদের লক্ষ্য ছিল বাংলার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া এবং তাদের খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়া সে জন্য ভোট ও ভাতের অধিকারের আন্দোলন আমরা শুরু করি।

কৃষি মন্ত্রণালয় ও এর সহযোগী দফতর-সংস্থার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

চলতি অর্থবছরে সার-বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ সহায়তা বাবদ ২ কোটি ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৯ জন কৃষককে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৪১৩.৪৬ কোটি টাকার প্রণোদনা সরাসরি প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে কৃষি গবেষণা, সম্প্রসারণ, সমবায় উদ্বুদ্ধকরণ, প্রযুক্তি উদ্ভাবন, মহিলাদের অবদান, বাণিজ্যিকখামার, বনায়ন, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালন এবং মাছ চাষ প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ৩২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার দেওয়া হয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.