শুভেন্দুর জয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মমতা, শুনানি আজ

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম আসনের ফলাফল নিয়ে এবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ভোট গণনায় কারচুপিসহ একাধিক অভিযোগে একটি মামলা করেছেন ওই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যাওয়া মমতা।

আজ শুক্রবার (১৮ জুন) কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আদালত সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

গত ২ মে ভোটের ফল প্রকাশের দিনই মমতা বলেছিলেন, নন্দীগ্রামের ফল নিয়ে আদালতে যাবেন তিনি। কিন্তু কবে যাবেন, সে ব্যাপারে কিছুই জানাননি সে সময়।

ভোট গণনার দিন টানটান উত্তেজনায় প্রথমে খবর চাউর হয়, ১২০০ ভোটে নন্দীগ্রামে জয়ী হয়েছেন মমতা। কিছুক্ষণ পরই আবার খবর আসে, নন্দীগ্রামে মমতা নয়, জিতেছেন শুভেন্দু অধিকারী। ১৯০০-র কিছু বেশি ভোটের ব্যবধানে তিনি জিতেছেন নন্দীগ্রামে। পরে শুভেন্দুকে জয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার। তখন থেকেই গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এবার নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে পুর্নগণনার দাবি জানালেন খোদ মমতা।

গণনায় কারচুপির অভিযোগে একাধিক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। গণনার সময়ে দুই ঘণ্টার জন্য সার্ভার চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। তা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছে জোড়াফুল শিবির। এ ছাড়াও মমতা ১২শ’ ভোটে জিতে গেছেন; এমন খবর প্রকাশ্যে আসার পরও নতুন করে গণনা করে শুভেন্দুকে জয়ী ঘোষণার বিষয়টি ভালো চোখে দেখেনি কংগ্রেস। শুধু তাই নয়, মোবাইলে একটি মেসেজ দেখিয়ে মমতা সাংবাদিকদের সামনে বলেছিলেন, ‘একজনের কাছ থেকে এসএমএস পেয়েছি। নন্দীগ্রামের এক রিটার্নিং অফিসার জানিয়েছেন, বন্দুকের নলের মুখে কাজ করতে হচ্ছে। তিনি যদি পুনর্গণনার নির্দেশ দেন, তাহলে তার প্রাণ সংশয় হতে পারে। নন্দীগ্রামে মেশিন পাল্টে দেওয়া হয়েছে।’

শুভেন্দু কিন্তু ভোটের ফল বেরুনোর পর থেকেই মমতাকে লাগাতার আক্রমণ করে এসেছেন। মমতা ভোটে হেরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, এসব বলেও কটাক্ষ করেছেন তাকে। জোড়াফুল শিবির শুভেন্দুর পাল্টা নানা কথা বললেও মমতা এসব নিয়ে তেমন করে মুখ খোলেননি। তবে এবার তিনি পূর্ব ঘোষণা মতো আদালতের শরণাপন্ন হলেন।

তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ এমপি সৌগত রায় বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে যদি কারও অভিযোগ থাকে তাহলে একমাত্র উপায় হচ্ছে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক আইন অনুসারে ইলেকশন পিটিশন করা। নিয়ম হচ্ছে ভোট প্রক্রিয়া শেষে দেড় মাসের মধ্যে এই পিটিশন জমা দিতে হয়। হাইকোর্টে এই ধরনের মামলার শুনানি শুরু হলে টানা শুনানি চলে। মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলেছিলেন গণনা নিয়ে তার অভিযোগ আছে। সঙ্গে অন্যান্য অভিযোগ আছে। নিয়ম মেনেই তিনি দেড় মাসের মধ্যে সেই পিটিশন জমা দিয়েছেন। ২ মে ভোটের ফলাফল বেরিয়েছে। ১৭ জুন দেড় মাসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তার আগেই পিটিশন দায়ের করায় শুক্রবার থেকে মামলা শুরু হয়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেই প্রতিশ্রুতি মতোই তিনি কাজ করেছেন।

এদিকে বিজেপির আইটি সেলের সর্বভারতীয় প্রধান অমিত মালব্য টুইটে কটাক্ষ করে লিখেছেন, হেরেও জনগণের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.