করোনায় রাজধানীতে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৭ শতাংশ

করোনাকালে মানুষের আয় কমলেও বিপরীতে বাড়ছে ব্যয়। শহর-গ্রাম সব জায়গার ক্ষেত্রেই এটি ঘটছে। গত বছর (২০২০) রাজধানী ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং সেবা-সার্ভিসের দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ।

আগের বছর এই ব্যয় বেড়েছিল যথাক্রমে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ ও ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। আর ২০১৮ সালে তা ছিল যথাক্রমে ৬ শতাংশ ও ৫ দশমিক ১৯ শতাংশ।

করোনার প্রভাবে আয় কমে যাওয়ার বিপরীতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীবাসী, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের জীবন মানের অবনতি ঘটে। বেড়ে যায় টানাপোড়েন।

আজ বুধবার (১৬ জুন) এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এই তথ্য জানিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব ‘জীবনযাত্রার ব্যয় ও ভোক্তা স্বার্থসংশ্লিষ্ট কয়েকটি প্রাসঙ্গিক বিষয়ে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে প্রতিবেদন-২০২০’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

ক্যাব রাজধানীর ১৫টি খুচরা বাজার ও বিভিন্ন সেবা-সার্ভিসের মধ্য থেকে ১১৪টি খাদ্যপণ্য এ ২২টি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী এবং ১৪টি সেবা-সার্ভিসের সংগৃহীত মূল্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তবে এই হিসাবে শিক্ষা, চিকিৎসা ও প্রকৃত যাতায়াত ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

ক্যাবের সভাপতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোক্তাকণ্ঠের সম্পাদক কাজী আবদুল হান্নান।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে চালের দাম ২০ শতাংশ, মসুরের ডাল ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ, মসলা ২৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ, শাকসবজি ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ, গরু-খাসির মাংস ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ ও মুরগির দাম বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এ ছাড়া ডিমের দাম ৫ দশমিক ৩২ শতাংশ, মাছের দাম ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ ও গুঁড়া দুধের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

ওদিকে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্তের বাড়িভাড়া গড়ে ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ক্যাবের প্রতিবেদনে। এ ছাড়া ওয়াসার পানির দাম প্রতি হাজার লিটারে ২৫ শতাংশ, আবাসিকে বিদ্যুতের দাম ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং বাণিজ্যিকে বিদ্যুতের দাম ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়েছে।

ক্যাবের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, শর্ষের তেলের দাম কেজিতে ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ, ডালডার দাম ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ ও খোলা আটাতে দাম কমেছে ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। আর স্থিতিশীল অথবা অপরিবর্তিত ছিল লবণ, চা-পাতা, দেশি-বিদেশি কাপড়, গেঞ্জি, তোয়ালে ও গামছার দাম।

এক প্রশ্নের জবাবে ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ঘাটতির কারণে কৃষি পণ্যের দাম বাড়েনি। সরবরাহ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে দাম বেড়েছে। কৃষকরা পর্যাপ্ত পণ্য উৎপাদন করেছেন। কিন্তু এসব পণ্যের সঠিক মূল্য পাননি।

তিনি করোনার অভিঘাত থেকে কৃষকদের রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.