স্বাস্থ্যের কর্মকর্তারা চেয়ারে বসতেই উঠে গেলেন সাংবাদিকরা

দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা করে গ্রেফতারের প্রতিবাদে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেছেন সাংবাদিকরা।

তিন জন অতিরিক্ত সচিব ব্রিফিং করতে আসলে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বয়কোটের এ ঘোষণা দেন।

আজ মঙ্গলবার (১৮ মে) বেলা ১১টায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিষয়ে ব্রিফিংয়ের কথা থাকলেও স্বাস্থের কর্মকর্তারা সম্মেলনকক্ষে প্রবেশ করেন ১১টা ২০ মিনিটে।

এরপরই বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ সংবাদ সম্মেলন বয়কট ঘোষণা করে সবাইকে সম্মেলন কেন্দ্র ত্যাগ করার অনুরোধ জানান। এরপর সেখান থেকে চলে যান সাংবাদিকরা।

তিনি বলেন, গতকাল রোজিনা ইসলামের বিষয়ে কথা বলতে এবং ঘটনা জানতে আমরা দীর্ঘ সময় স্বাস্থ্য সচিবের রুমের সামনে অপেক্ষা করেছি, তিনি দেখা করেননি। তিনি আমাদের বারবার অপমান করেছেন। আজকের এই ব্রিফিং আমরা বয়কট করছি। পরবর্তী কর্মসূচি আমাদের বিএসআরএফের জরুরি সভা শেষে নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নেবেন।

তার এই ঘোষণার পর সব সাংবাদিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিং বয়কট করে বেরিয়ে যান। এ সময় বিএসআরএফের অর্থ সম্পাদক মাসউদুল হক ও কার্যনির্বাহী সদস্য মোরসালীন বাবলা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে আজ সকালে বাংলাদেশ বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ব্রিফিং বয়কটের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার ও বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সদস্য রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা করে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আজকের (মঙ্গলবার) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত বেলা ১১টার সংবাদ সম্মেলন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী কর্মসূচি কার্যনির্বাহী কমিটির আজকের জরুরি সভা থেকে ঘোষণা করা হবে। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করছে বিএসআরএফ।

জানা যায়, সোমবার (১৭ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। স্বাস্থ্য সচিবের পিএস সাইফুল ইসলামের রুমে ফাইল থেকে নথি সরানোর অভিযোগে তাকে পুলিশ দিয়ে ওই রুমে আটকে রাখা হয় এবং তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম রোজিনা ইসলামের গলা চেপে ধরে তাকে শাসাচ্ছিলেন। এসময় তিনি সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পড়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে রোজিনা ইসলামকে পুলিশ স্বাস্থ্য সচিবের পিএসের রুম থেকে থেকে বের করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এরপর রাত পৌনে ১২ টার দিকে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলার নম্বর ১৬, দণ্ডবিধি ৩৯৭ এবং ৪১১ অফিসিয়াল সিক্রেসি এক্ট ১৯২৩ এর ৩/ ৫ এর ধারা মামলা করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী। এই মামলার একমাত্র আসামি করা হয়েছে তাকে। তার বিরুদ্ধে সরকারি নথি সরানো ও ছবি তোলার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.