হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

সম্প্রতি নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেওয়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাতে সংগঠনের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী এক ভিডিও বার্তায় কমিটি বিলুপ্তির এই ঘোষণা দেন। তবে ওই বার্তায় তিনি এটিও জানান, শিগগির একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। আর ওই আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের মাধ্যমে সংগঠনটি পরিচালনা করবে।

ভিডিও বার্তায় জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার পরামর্শে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। ইনশাল্লাহ আগামী দিনে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে হেফাজতের কার্যক্রম শুরু হবে।

গতমাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতা করে হেফাজতের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব চালানো হয়। তাতে ১৮ জন মানুষের প্রাণহানীও ঘটে। পোড়ানো হয় সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি। ওই ঘটনায় সরকার কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে হেফাজত নেতাদের গ্রেপ্তার শুরু করে। মাঝখানে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল হক এক নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন। সব মিলিয়ে নাজুক অবস্থায় পড়ে সংগঠনটি। এমন অবস্থায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা সরকারের সাথে আপোষের উদ্যোগ নেন। এর অংশ হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে দেখা করে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন যে, তারা (হেফাজত) শুধুই একটি ধর্মীয় সংগঠন। রাজনীতির সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বর্তমান সরকারের বিরোধীও নয় তারা। তারা আর কোনো হেফাজত নেতাকে গ্রেপ্তার না করা এবং গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির আহ্বান জানান। তবে তাদের এই আহ্বানে সাড়া না দিয়ে হেফাজত নেতাদের গ্রেপ্তার চালিয়ে যেতে থাকে সরকার।

সরকারের সাথে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সাংঘর্ষিক অবস্থার মুখে রোববার বিকালে আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের প্রচলিত সব ধরনের রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়। আল-হাইআতুলের অধীনেই কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা হয়ে থাকে। যাত্রাবাড়ীর একটি মাদ্রাসায় আল-হাইআতুলের স্থায়ী কমিটির সভায় ছাত্র-শিক্ষকদের রাজনীতির বাইরে থাকার ওই সিদ্ধান্ত হয়। তাঁদের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত জানাবেন বলেও ঠিক হয়।

বিকালের ওই সিদ্ধান্তের পর রাতে সংগঠনের আমির জুনায়েদ বাবু নগরী হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করার ঘোষণা দেন।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.