ওয়ালটন টিভি রপ্তানিতে দুর্দান্ত সাফল্য

করোনা মহামারিতে সারা বিশ্বের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ইউরোপসহ উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতিতে টালমাটাল অবস্থা। এমন পরিস্থিতিতেও সুখবর নিয়ে এলো বাংলাদেশি জায়ান্ট ওয়ালটন ব্র্যান্ডের টেলিভিশন। প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই আগের বছরের মোট রপ্তানির পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে। নতুন বাজার সৃষ্টি তথা বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে রপ্তানি আয়ে এই সফলতা অর্জন করেছে ওয়ালটন টেলিভিশন। ২০২৩ সালের মধ্যে ৫ মহাদেশের সবগুলো দেশে টিভি রপ্তানির টার্গেট নিয়েছে বাংলাদেশি এই শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড।

জানা গেছে, ২০২০ সালের টিভি রপ্তানির পরিমাণ এ বছরের প্রথম প্রান্তিকেই (জানুয়ারি থেকে মার্চ) ছাড়িয়েছে ওয়ালটন। যা আগের বছরের মোট টিভি রপ্তানির চেয়ে প্রায় ১৩৭ শতাংশ বেশি। এই অর্জন শুধু ওয়ালটনের জন্যই নয়, দেশের রপ্তানি আয় ও অর্থনীতির জন্যও এক বিশাল মাইলফলক।

কোভিড-১৯ এর ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও ইউরোপের জার্মানি, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, স্পেন, পোল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশে শক্তিশালী বাজার তৈরিতে সাফল্য দেখিয়েছে ওয়ালটন। সম্প্রতি তারা রোমানিয়া এবং ইতালিতে বাজার সম্প্রসারণ করেছে। ইউরোপে নতুন বাজার সৃষ্টি ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে রপ্তানি বৃদ্ধিতে অবদান রাখায় ওয়ালটন টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তফা নাহিদ হোসেনকে বিশেষ অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি রাজধানীতে ওয়ালটন করপোরেট অফিসে আয়োজিত ‘ব্র্যান্ডিং হিরোস’ শীর্ষক এক প্রোগ্রামে ‘এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ পান তিনি।

তার হাতে পুরস্কারের ক্রেস্ট তুলে দেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ।

 

যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবুল বাশার হাওলাদার, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার, এমদাদুল হক সরকার ও হুমায়ূন কবীর, ওয়ালটনের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম প্রমুখ।

ওয়ালটন হাই-টেকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ জানান, সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের পণ্য সরবাহের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বাজার ধরতে সক্ষম হচ্ছে ওয়ালটন। ফলে করোনা মহামারিতেও স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতেও ওয়ালটন ব্যাপক অবদান রাখছে।

তিনি বলেন, ‘ওয়ালটনের টার্গেট-বিশ্ব ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্যের বাজারে শক্তিশালী অবস্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পতাকাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করা।’

প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, ‘অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও উচ্চ মানের ওয়ালটন টেলিভিশনের প্রতি আস্থা তৈরি হওয়ায় বৈশ্বিক ক্রেতাদের কাছ থেকে মিলছে ব্যাপক সাড়া। এর পরিপ্রেক্ষিতে করোনা মহামারির মধ্যেও ইউরোপে বাজার সম্প্রসারণে ব্যাপক সফলতা আসছে। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে জার্মানি, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, পোল্যান্ড, স্পেনসহ বিশ্বের অনেকগুলো দেশে ১০ গুণ বেশি রপ্তানি হয়েছে ওয়ালটন টেলিভিশন।

এছাড়া, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই ছাড়িয়ে গেছে ২০২০ সালের টিভি রপ্তানি। অর্জিত হয়েছে ১৩৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।’

তিনি জানান, ওয়ালটন এখন বিশ্বের সেরা পাঁচটি টেলিভিশন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় পৌঁছানোর মিশন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি, ২০২৩ সালের মধ্যে পাঁচটি মহাদেশের সবগুলো দেশে ওয়ালটনের তৈরি টেলিভিশন রপ্তানির লক্ষ‌্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

গাজীপুরের চন্দ্রায় নিজস্ব কারখানায় ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ডে টিভি তৈরি করছে ওয়ালটন। ইতোমধ্যে সর্বাধুনিক টেকনোলজির ডলবি এবং গুগল লিস্টেড ‘লাইসেন্সড টিভি ম্যানুফ্যাকাচারার’ এর স্বীকৃতি পেয়েছে ওয়ালটন। বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটনই ডলবি’র অফিশিয়াল সাউন্ড কোয়ালিটির টিভি উৎপাদন করছে। এসব টিভির দাম যেমন সাশ্রয়ী, তেমনি মানেও সেরা। তাই, স্থানীয় বাজারে মার্কেট শেয়ার বিবেচনায় শীর্ষে এখন ওয়ালটন টিভি।

স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ২০১০ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটন টিভি। বর্তমানে ৩৫টিরও বেশি দেশে শতাধিক বিজনেস পার্টনারের মাধ্যমে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেবেলযুক্ত টিভি রপ্তানি করছে ওয়ালটন। পরিবেশকের মাধ্যমেও বিভিন্ন দেশে নিজস্ব ব্র্যান্ড নামে টিভি রপ্তানি হচ্ছে। শীর্ষ টিভি রপ্তানিকারক হিসেবে ওয়ালটন দেশের রপ্তানি আয় ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, কর্মস্থংস্থান সৃষ্টি, প্রযুক্তি খাতে দক্ষ কর্মী গড়ে তোলায় অবদার রাখছে। সেই সঙ্গে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে রাখছে বিশেষ অবদান।

অর্থসূচক/আরএ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.