আগুনে মাদার টেক্সটাইলের উৎপাদন বন্ধ, ক্ষতি ১০০ কোটি টাকা

গাজীপুর শ্রীপুরে অবস্থিত মাদার টেক্সটাইলের বড় একটি অংশ আগুনে পুড়ে গেছে। কারখানাটির পাঁচটি ইউনিটের তিনটিতেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন এর সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েক হাজার শ্রমিক।

টেক্সটাইল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাদার টেক্সটাইল দেশীয় বাজারে পুনর্ব্যবহারযোগ্য সুতার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। আগুনের কারণে তাদের সুতা উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়তে পারে বাজারে।

সম্প্রতি ইংল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ার ১০০ টনের একটা অর্ডার পেয়েছিল মাদার টেক্সটাইল। কিন্তু আগুন লাগার পর থেকে জুট প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে রঙিন সুতা তৈরি করা এই কারখানাটি এখন বন্ধ। ফলে বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে প্রতিষ্ঠানটি।

মাদার টেক্সটাইলে মূলত ২০ ধরনের রঙিন সুতা তৈরি হয়। এগুলো দেশীয় বাজারে সুতার ৮০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে থাকে। এখন কারখানাটি বন্ধের কারণে বাজারে রঙিন সুতার দাম বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

টেক্সটাইলটির পরিচালক (অপারেশন) মো. হানিফ গণমাধ্যমকে বলেন, মাদার টেক্সটাইল দেশের অন্যতম বৃহৎ রফতানিযোগ্য সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এটি দৈনিক ১০০ টন সুতা উৎপাদন করতে পারে। এই কারখানায় ৬ হাজার লোকের কর্মসংস্থান। বর্তমানে কারখানাটি বন্ধ আছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এটি চালু করা সম্ভব না।

তিনি জানান, করোনাকালীন সরকারের প্রণোদনা না পাওয়া সত্ত্বেও শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন ভাতা, বকেয়া গ্যাস বিল এবং ব্যাংকের ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা হয়েছে। যার কারণে অর্থের অভাবে বীমা করা সম্ভব হয়নি।

এ প্রসঙ্গে মাদার টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এলিজা সুলতান বলেন, অগ্নিকাণ্ডে বয়লার, ডায়িং, কার্ডিং মেশিনসহ অনেক মালামাল পুড়ে গেছে। কারখানার ৫টি ইউনিটের মধ্যে তিনটিই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় প্রায় ১০০ কোটি টাকার মতো।

তিনি বলেন, মাদার টেক্সটাইল বাজারে রিসাইকেল রঙ্গিন সুতার সবচেয়ে বড় অংশ সরবরাহ করে। আমরা উৎপাদনে না আসতে পারলে বাজারে এসব সুতার দাম এমনিতেই বেড়ে যাবে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন বলেন, মাদার টেক্সটাইল দেশীয় বাজারে মোট সুতার বড় অংশ সরবরাহ করে থাকে, এটি সত্য। কিন্তু সেখানে অগ্নিকাণ্ডের কারণে এখনই বাজারে বড় প্রভাব পড়বে কি-না, তা বলা যাচ্ছে না। লকডাউনের বাজারে সুতার চাহিদা কী পরিমাণ আছে, আগে তা দেখতে হবে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.