কারাগারে থেকে আ.লীগ নেতাদের বাসায় ডাকাতির নির্দেশ!

পেশাদার ডাকাত সদস্যদের সঙ্গে জঙ্গিদের একটি গ্রুপ মিশে সরকারি কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসায় ডাকাতি করে বেড়াতো। কারাগারে থেকেই ডাকাতির এ নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ জঙ্গি নেতারা। ডাকাতির অর্থের একটি অংশও কারাগারে শীর্ষ জঙ্গি নেতাদের কাছে যেত। বাকি অংশ ব্যয় করা হতো জঙ্গিদের বিভিন্ন কার্যক্রমে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও জোনাল টিম সোমবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় দুই জঙ্গিকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য পেয়েছে। দুই জঙ্গিকে আজ মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে আনা হয়েছে।

গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহাদাত হোসেন সুমা গণমাধ্যমকে জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দুই জঙ্গিকে গ্রেফতারের পর তাদের কাছে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের সহযোগীদের গ্রেফতারেও অভিযান চালানো হচ্ছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও জোনাল টিমের সদস্যরা ফার্মগেট এলাকার পূর্ব তেজতুরী বাজার এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় আসিফুর রহমান আসিফ (২৬) ও পিয়াস শেখ (২৮) নামে দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল, কয়েকটি মোবাইল ও ৩৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত দুই জঙ্গি জানায়, তারা পুরাতন জেএমবির সক্রিয় সদস্য। কাশিমপুর কারাগারে বন্দি তাদের শীর্ষ নেতা আব্দুল্লাহ আল তাসনিম ওরফে নাহিদ, আবু সাঈদ, আল-আমিন ও ফয়সালের নির্দেশে তারা সংগঠনের তহবিল সংগ্রহের জন্য ডাকাতি করে বেড়াতো। পুলিশের অভিযানের সময় তাদের সঙ্গে আনোয়ার আলী ওরফে হৃদয়, তানজিল বাবু, হাফিজুল শেখ ওরফে সকাল, আবু সালেহ, পাভেল ওরফে রাহুল, জোসেফ, রোজীসহ বেশ কয়েকজন বৈঠকের জন্য মিলিত হয়েছিল।

গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে হাতিরঝিল, তেজগাঁও থানাধীন এলাকায় ছয়টি ডাকাতির ঘটনায় তারা পেশাদার ডাকাত দলের সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততা পেয়েছিলেন। সেসময় পেশাদার কয়েকজন ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতারের পর হৃদয়, তানজিল বাবু, সকালসহ কয়েক জনের নাম পান তারা।

গ্রেফতারকৃত আসিফকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আরও জানান, তারা আসিফের মোবাইল ফোনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন অ্যাপ ঘেঁটে কিছু তথ্য পেয়েছেন। জেলখানা থেকে কারাবন্দি শীর্ষ জঙ্গি নেতারা তাদের এসব বার্তা পাঠিয়েছিল। এর মধ্যে একটি বার্তায় সরকারি কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাসায় ডাকাতি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ডাকাতি করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়লে কী করতে হবে সে বিষয়েও নির্দেশনা রয়েছে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.