ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘাতে ঝরল আরও ৪ প্রাণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ, বিজিবি সঙ্গে হেফাজতের কর্মীদের সংঘর্ষে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে দুইদিনে মোট ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংঘর্ষে আরও অন্তত অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন।

শনিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে আজ রোববার (২৮ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- জেলার নন্দনপুরের সাদু মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন (২২), সরাইলের সৈয়দটুলা গ্রামের সফি আলী মিয়ার ছেলে আলামিন (১৯) সরাইলের খাটিহাতা বিশ্বরোডের অলতু মিয়ার ছেলে কালন মিয়া ও অজ্ঞাতপরিচয় (৪০) একজন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার হরতালের শুরুতে সকাল থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও মাদরাসাছাত্ররা বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এসময় পুলিশের সঙ্গে মাদরাসা ছাত্রদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুপুরের দিকে বিক্ষোভকারীরা হাসপাতাল রোডে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে ঢুকে হামলা করেন। এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামিকে মারধর করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন গণমাধ্যমকে জানান, অতর্কিতভাবে প্রেস ক্লাবে হামলা করা হয়। হামলাকারীরা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামির ওপর আক্রমণ করেন। তার মাথায় পাঁচটি সেলাই দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও হরতালের পক্ষে বিক্ষোভ মিছিলের সময় জেলা সদরের পশ্চিম মেড্ডা এলাকায় জেলা পুলিশ লাইনে হামলা চালান তারা। এসময় পুলিশের গুলিতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মৃত্যু হয়। অন্যদিকে জেলার সরাইলের বিশ্বরোড এলাকায় পুলিশের সাথে হরতালকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে একপর্যায়ে পুলিশ গুলি ছুড়ে। এ সময় আলামিন ও কালন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে আনা হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষে নিহতরা হলেন- নন্দনপুর হারিয়া গ্রামের আবদুল লতিফ মিয়ার ছেলে ওয়ার্কশপের দোকানী জুরু আলম (৩৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার দাবিড় মিয়ার ছেলে শ্রমিক বাদল মিয়া (২৪) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া বারিউড়া এলাকার মৈন্দ গ্রামের জুরু আলীর ছেলে সুজন মিয়া (২২), আলী আহমেদের ছেলে শ্রমিক কাউসার মিয়া (২৫) ও বউধল এলাকার জুবায়ের (১৪)।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, আজকের পরিস্থিতি আপনারা নিজেরাই দেখছেন। জনগণের জানমালের রক্ষায় আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এসব তাণ্ডব চালাচ্ছে জামায়াত, শিবির ও বিএনপি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.