ডাবল সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যান্ডের বড় সংগ্রহ

উইকেটে ঘাসের সঙ্গে হালকা বাতাস। পেসাররা একটু বাড়তি সুবিধা পাবেন তা অনেকটাই অনুমেয়। কিন্তু ওয়েলিংটনে শুরুর আধা ঘন্টার গল্পটা বাংলাদেশের খাতায় লিখতে পারলেন না মুস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদ। হেনরি নিকোলস এবং মার্টিন গাপটিল এই দুজনকে সামাল দিলেন দারুণভাবে।

মুস্তাফিজকে ৩ ওভার করিয়ে তামিম ইকবাল বল তুলে দিলেন রুবেল হোসেনের হাতে। এরপরই একটু হলেও বদলে গেল ম্যাচের চিত্র। যদিও এই চিত্র বদলানোর আগে আবারও খলনায়ক মুশফিকুর রহিম। তাসকিনের ফুলার লেন্থে ফেলা বল সামনে এগিয়ে মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন নিকোলস।

ব্যাটের কানায় লেগে বল গতিতে চলে গেল বাউন্ডারিতে। এর আগে ছুঁয়ে গেল মুশফিকের গ্লাভস। আরও একবার ক্যাচ মিসের খাতায় নাম লেখালেন তিনি। অবশ্য দুই বল পরই এল কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। তাসকিনের লেন্থে ফেলা বল আবারও নিকোলসের ব্যাট কানায় লেগ চলে গেল দ্বিতীয় স্লিপে থাকা লিটন দাসের হাতে।

১৮ রানে নিকোলস ফেরার খানিক পর পরের ওভারে রুবেল হোসেনের স্লোয়ার বাউন্সারকে পুল করতে গিয়ে মিস টাইমে মিড অনে লিটন দাসের হাতে ধরা পরলেন গাপটিল। ২৬ রানে তাকে ফিরিয়ে থামলেন না রুবেল।২ ওভার পর তার আরেকটি ফুল লেন্থে ফেলা বল কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ধরা পরলেন রস টেলর।

৭ ওভারে ৪০ রানে উইকেট শুন্য থাকা নিউজিল্যান্ড তখন ১১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৫৭ রান। ক্রিজে নেমে আবারও কিউইদের দায়িত্ব কাঁধে নেন অধিনায়ক টম ল্যাথাম এবং ডেভন কনওয়ে। টানা ৭ ওভার বোলিং চালিয়ে গেলেন তাসকিন। বেশ কয়েকবার ব্যাটের খুব কাছ দিয়ে তার বল গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে। ১২ ওভারে বাংলাদেশের ৩ পেসার মিলে লেন্থ বল করেন ৬১ শতাংশ। তাসকিনকে দিয়ে টানা ৭ ওভার করিয়ে তামিম বল তুলে নেন শেখ মেহেদির হাতে। তাতে অবশ্য কোনো লাভ হয়নি।

এই জুটিতে দলীয় স্কোর ১০০ পার হওয়ার সঙ্গে কিউইদের চাপমুক্তও করেন দুজন। এরপর উল্টো মুস্তাফিজুর রহমানকে টানা ৩টি চারও মারেন কনওয়ে। নিজেদের মধ্যে ৫০ রানের জুটি গড়লেও সৌম্য সরকারের প্রথম বলেই ফেরেন ল্যাথাম। ৩৩ বলে ১৮ রানে ফেরেন কিউই অধিনায়ক। ৪ উইকেট হারালেও দলকে কোন প্রকার দুশ্চিন্তায় ফেলেননি কনওয়ে। ড্যারেল মিচেলকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলেন তারা। দলকে দুইশোর ওপর নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে শতরানের জুটিও গড়েন তারা। মাঝে বাজে ফিল্ডিং, রান আউট মিস এবং ক্যাচ ছাড়ার সুযোগটাও লুফে নেয় এই জুটি।

কনওয়ে এবং মিচেল দুজনই পান হাফ সেঞ্চুরি। তাসকিনকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরিও তুলে নেন কনওয়ে। যদিও শেষ পর্যন্ত ১২৬ রানে থামতে হয় তাকে। ততক্ষনে কিউইদের স্কোর ২৭০’র ওপর। এরপর ড্যারেল মিচেলের ক্যাচ ছেঁড়ে তাসকিনকে আরও হতাশায় ডোবান মাহমুদউল্লাহ।

শেষের দিকে রুবেলের তৃতীয় শিকার হয়ে নিশাম ফিরলেও ৮৩ রানে শেষ ওভারে ব্যাটিং শুরু করেন মিচেল। মুস্তাফিজের প্রথম তিন বলে এক নো বল সহ ৩টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরির আশা বাঁচিয়ে রাখেন তিনি। ফ্রি হিটে দুই এবং এরপরের বলে এক নিয়ে স্ট্রাইক বদল করলেও পঞ্চম বলে ৩ রান নেন স্যান্টনার।

শেষ বলে সেঞ্চুরির জন্য মিচেলের প্রয়োজন ছিল দুই রানের। মিড উইকেটে বল ঠেলে দিয়ে দুইয়ের জন্য দৌড় দিলে ফিল্ডারের থ্রো মুশফিক লুফে নিতে ব্যর্থ হলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন এই ব্যাটসম্যান। ২৯৭ থেকে নিউজিল্যান্ডের স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৩১৮। শেষ ওভারে আসে ২১ রান। ৩ উইকেট নিলেও ১০ ওভারে ৭০ রান খরচ করেন রুবেল। তাসকিন, মুস্তাফিজ এবং সৌম্য শিকার করেন একটি করে উইকেট।

অর্থসূচক/এএইচআর

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.