মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার কাউন্সিলে প্রস্তাব গৃহীত

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, টেকসই ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে জোর দিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে মিয়ানমারের সমস্যার উপর একটি রেজুলেশন গৃহীত হয়েছে। রেজুলেশনটি সর্বসম্মতিতে গৃহীত হলেও চীন, রাশিয়া, ভেনেজুয়েলা, বলিভিয়া ও ফিলিপিন্স এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়নি।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জারিরা জানিয়েছে, শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

জাতিসংঘের শীর্ষ এই মানবাধিকার সংস্থা মিয়ানমারকে অং সান সু চি ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের মুক্তি এবং সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী মানুষের প্রতি সহিংসতা বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছে।

যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুরোধে শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিশেষ এই অধিবেশন চলাকালীন মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রস্তাবে বলা হয়, যে সমস্ত মানুষকে আটক করা হয়েছে, তাদের ছেড়ে দেওয়াসহ নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

তবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ভোটের আগে বলেছেন, এই প্রস্তাবটি ‘গ্রহণযোগ্য নয়’।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করার পরে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়।

জাতিসংঘের ডেপুটি মানবাধিকার প্রধান নাদা আল নাশিফ বলেছেন, মিয়ানমার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বিশ্ব সম্প্রদায়।
আজ শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দেশব্যাপী আরও বিক্ষোভ প্রত্যাশা করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ফোরামে ফিরে এসেই মানবাধিকার কাউন্সিলের অন্যান্য সদস্য দেশকেও তা অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে।

মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত টমাস অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, ক্রমবর্ধমান রিপোর্ট এবং ফটোগ্রাফিক প্রমাণ পাওয়া গেছে যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ক্ষমতা দখলের পর থেকে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহার করছে।

কাউন্সিলকে অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বাধ্যতামূলক করাসহ আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে, সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে ‘চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত’ হচ্ছে বলে অভিযোগ করে জাতিসংঘের তদন্ত আহ্বান করেছেন দেশটির প্রায় ৩০০ জন এমপি। অভিযোগের তীর ছোড়া হয়েছে সামরিক বাহিনীর দিকে।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সম্প্রতি গৃহীত বিবৃতিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করা না হলেও মানবাধিকার কাউন্সিলের রেজুলেশনে রোহিঙ্গা শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে। এ মাসের প্রথমে সামরিক বাহিনী মিয়ানমার নেত্রী অং সান সুচীসহ অন্য রাজনৈতিক নেতাদের অন্তরীণ করে এবং জরুরি আইন জারি করে। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিভিন্ন দেশ বিবৃতি প্রদান করে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.