ভ্যাকসিন গ্রহণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

করোনা মহামারি দূর করতে টিকা নিতে গ্রামের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, দেশের মানুষকে করোনার মহামারি থেকে মুক্ত রাখতে তড়িৎ গতিতে টিকা আনা হয়েছে। সবাই সপরিবারে টিকা নিন। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪১তম জাতীয় সমাবেশ এবং কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জানেন, আমরা করোনা ভাইরাস মোকাবিলা করছি। প্রতিটি মানুষ যেন করোনা ভ্যাকসিন নেয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। অনেকে ভয় পায়, সুঁই ফোটাতেও ভয় পায়। সে ক্ষেত্রে আপনারা গ্রামের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবেন। আমরা চাই, সবাই টিকা নিক, সুরক্ষিত থাকুক।

সরকারপ্রধান বলেন, টিকা নিতে নিবন্ধনের জন্য ইতোমধ্যে ডিজিটাল সেন্টার করা হয়েছে। সেই ডিজিটাল সেন্টারের গিয়ে সবাই নিবন্ধন করতে পারবেন। সবাই নিজে এবং পরিবারের সব সদস্যসহ যেন টিকা নেয় সেদিকে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আনসারের সদস্যরা গ্রামের মানুষকে একটু উদ্ভুদ্ধ করবেন। এই মহামারি, যেটা আজ সারা বিশ্বব্যাপী দেখা দিয়েছে তার হাত থেকে অন্তত বাংলাদেশের মানুষ যেন মুক্তি পায়। তার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আপনারা টিক নিন। আপনারা সুরক্ষিত থাকুন। টিকা নিয়ে নিজেকে আরও সুরক্ষা দেন। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আনসার-ভিডিপি সবসময় যে কোনও কাজে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। যেমন অগ্নি সন্ত্রাস। বিএনপি-জামায়াত জোট অগ্নি সন্ত্রাসে জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করছিল। রেলের ওপর আগুন ধরানো অথবা রেললাইন সরিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ হত্যা করার মতো অমানবিক কাজে বিএনপি-জামায়াত জোট সম্পৃক্ত ছিল। সেইসব জায়গায় এবং সারা বাংলাদেশে মানুষের জানমাল রক্ষায় আনসার বাহিনীকে আমরা সম্পৃক্ত করেছিলাম। তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেই সময় অগ্নি সন্ত্রাস মোকাবিলা করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০২০ সাল থেকে ২০২১। ২০২০ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, ২০২১ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করছি। সঙ্গে সঙ্গে সুবর্ণজয়ন্তীতে পদার্পন করেছি।‘ মুজিববর্ষের উদ্দীপন, আনসার-ভিডিপি আছে সারাক্ষণ’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আনসার ভিডিপি তারা বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। আনসার ভিডিপি সদস্যরা বাল্যবিবাহ রোধ করা, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে ভূমিকা রেখেছে। আমাদের দেশের যুবসমাজ যেন মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়, এ ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা আপনারা রেখে যাচ্ছেন এবং আরও রাখা প্রয়োজন। এর জন্য বিভিন্ন তথ্য প্রামাণ্যচিত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজ আপনাদের করতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা বিপথে না যায় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

আনসার-ভিডিপির কল্যাণে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, আনসার-ভিডিপির সুযোগ-সুবিধা, কল্যাণের দিকটা সবসময় আমাদের নজরে আছে। আনসার-ভিডিপি যে মানুষের সেবায় কাজ করে তার জন্য পদক দেওয়া বা সম্মান দেওয়া সেটা আমরাই প্রথম চালু করি। তারই স্বীকৃতি স্বরূপ সেবা ও সাহসিকতা পদক সেটা আমরা প্রবর্তন করি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মুস্তফা কামাল উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বাহিনীর মধ্যে সাহসিকতা ও কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘সাহসিকতা পদক’ প্রদান করেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.