অভ্যুত্থানের পক্ষে ‘যুক্তি’ দিলেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান সিনিয়ির জেনারেল মিন অং হ্লাং। ক্ষমতা গ্রহণের পর সোমবার প্রথম টেলিভিশনে ভাষণ দেনে তিনি। এসময় তিনি অভ্যুত্থানের পক্ষে কথা বলেন। দেশটির সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে টানা তৃতীয় দিনের বিক্ষোভের মধ্যে এই ভাষণ দিলেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

মিয়ানমারের সেনাপ্রধান বলেছেন, আটক ও নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির দলের নভেম্বরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় সুষ্ঠু ছিল না। তার ভাষণে অভ্যুত্থানের যৌক্তিকতা তুলে ধরার প্রয়াস ছিল বেশি, বিক্ষোভের হুমকির প্রতি নজর ছিল কম।

সিনিয়র জেনারেল বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকায় অনিয়ম তদন্ত করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে এবং নিরপেক্ষ প্রচারের অনুমোদন দেয়নি।

নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলে আসছে, তারা বড় ধরনের জালিয়াতি ও কারচুপির প্রমাণ পায়নি।

ভাষণে নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেছেন, নির্বাচনে যারা জয়ী হবে তাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। সংস্কার করা নতুন নির্বাচন কমিশন ভোট আয়োজন করবে।

সত্যিকার ও সুশৃঙ্খল গণতন্ত্র অর্জনের কথাও বলেছেন তিনি। তার এই মন্তব্যে অভ্যুত্থানের বিরোধিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তিনি জনগণকে সঠিক তথ্যের সঙ্গে থাকা এবং নিজের অনুভূতি অনুসারে না চলার আহ্বান জানিয়েছে।

ভাষণে বিক্ষোভকারীদের প্রতি কোনও হুঁশিয়ারির কথা বলেননি জেনারেল। শুধু বলেছেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নেই।

গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এদিন অভিযান চালিয়ে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়। দেশজুড়ে ঘোষণা করা হয় এক বছরের জরুরি অবস্থা। অপরদিকে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে মিয়ানমারে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন সু চি সমর্থকরা।

সোমবার টানা তৃতীয় দিনে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে বিক্ষোভকারীদের ভিড় আরও বেড়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাক। সকালে রাজধানী নেপিদোতে সমবেত হয় লাখ লাখ বিক্ষোভকারী। অন্যান্য শহরেও বিপুল সংখ্যক মানুষ সমবেত হয়ে সেনা শাসনবিরোধী স্লোগান নিয়ে।

বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, কিছু কিছু এলাকায় কারফিউ ও জন সমাবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা শুরু করেছে সেনাবাহিনী। মান্দালায়ে সোমবার রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। এই এলাকায় পাঁচ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ নিষিদ্ধ।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.