নার্স রুনুকে দিয়ে দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু

দেশের প্রথম করোনা (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন নিলেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরোনিকা কস্তা।

আজ বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্যাকসিন কার্যক্রম উদ্বোধনের পরই তিনি প্রথম ভ্যাকসিন নেন।

গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। টিকা নেওয়ার আগ মুহূর্তে রুনুকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভয় পাচ্ছো না তো!

জবাবে রুনু বলেন, না।

টিকাদান কর্মসূচি শুরুর মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। একই সঙ্গে ভ্যাকসিনের মাধ্যমে করোনা মহামারি মোকাবিলার বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় যুক্ত হলো বাংলাদেশ।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালে প্রথম সারির পাঁচ শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথম ভ্যাকসিন নেন হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরোনিকা কস্তা। তার পরেই ভ্যাকসিন নেন আরও দুইজন সিনিয়র স্টাফ নার্স মুন্নী খাতুন ও রিনা সরকার।

চিকিৎসকদের মধ্যে প্রথম ভ্যাকসিন পাবেন হাসপাতালের কনসালট্যান্ট লুৎফর কবির মবিন ও আল মামুন। এ ছাড়া যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ তারা মিয়া, একুশে পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. অরুপ রতন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. আফরোজা জাহিন এবং একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মোশাররফ হোসেনকে টিকা দেওয়া হবে।

সব মিলিয়ে ২৫ জনকে বুধবার করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছেন- স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিক।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমদ বলেন, প্রথম একজন নার্সের শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মধ্যদিয়ে দেশে কোভিড-১৯ টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরোনিকা কস্তা সাংবাদিকদের বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন। তবে দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্যে আমি ভ্যাকসিন নেব। অনেকেই ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা বলছেন। কিন্তু এটাও বুঝতে হবে- এই ভ্যাকসিনটি কিন্তু তৈরি করা হয়েছে একটি ভালো উদ্দেশ্যেই।

তিনি বলেন, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা ভেবে যদি কেউ ভ্যাকসিন না নেয়, তবে সেটা ভুল হবে। কারণ অনেক ওষুধেও কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। আবার অনেকের শরীরে অনেক ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। যদি আমার শরীরে অন্যান্য রোগ বেশি মাত্রায় না থাকে, তবে ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে তো কোনো সমস্যা নেই।

বাংলাদেশ সরকার, বেক্সিমকো ফার্মা ও সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী সরকার তিন কোটি ভ্যাকসিন কিনছে সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে। বেক্সিমকো এই ভ্যাকসিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। গত সোমবার এই ভ্যাকসিনের প্রথম চালান দেশে আসে। প্রথম চালানে এসেছে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন। এভাবে আরও পাঁচটি চালান আসার কথা। তার আগে গত বৃহস্পতিবার ভারতের উপহার হিসেবে দেশে ২০ লাখ ভ্যাকসিন আসে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.