মার্কিন প্রেসিডেন্ট ২০ জানুয়ারি কেন শপথ নেন?

যুক্তরাষ্ট্রের মতো এমন সুনির্দিষ্ট নিয়ম পৃথিবীর আর কোন দেশেই নেই। আমেরিকার সাধারণ নির্বাচন থেকে শুরু করে নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণসহ প্রতিটি ধাপই সুনির্দিষ্ট। মার্কিন সংবিধানে ২০ জানুয়ারি তারিখটি নির্ধারণ করা হয়েছে শপথ গ্রহণের জন্য।

তবে ১৯৩৭ সালের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি ৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হত। ১৯৩৭ সালের ২০ জানুয়ারি প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট। সেটা ছিল রুজভেল্টের দ্বিতীয় মেয়াদ। প্রথম মেয়াদে ১৯৩৩ সালে রুজভেল্ট শপথ নিয়েছিলেন ৪ মার্চ। ১৭৮৯ সালের সংবিধানের ধারাবাহিকতা মেনে সব মার্কিন প্রেসিডেন্টই ৪ মার্চ তারিখে শপথ নিয়েছেন।

দেশটির সংবিধানের ২০তম সংশোধন অনুসারে, নভেম্বরে নির্বাচনের পর নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ নেওয়ার পর্যন্ত সোয়া দুই মাসের বিরতির রাখা হয়।

এর আগে নির্বাচনের পর ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শপথ গ্রহণের জন্য চার মাসের একটা সময় রাখা হতো। কিন্তু সমস্যা হয় ১৮৬১ সালে। সে বছর মার্চে আব্রাহাম লিঙ্কন ক্ষমতা গ্রহণ করতে করতে চলমান গৃহযুদ্ধে মার্কিন পক্ষের পরাজয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। এই একই অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছিল সাত দশক পর ১৯৩৩ সালেও। মহামন্দার সেই সময়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট হার্বার্ট হুভারের কাছ থেকে ক্ষমতা নেন রুজভেল্ট। অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, মানুষ উদগ্রীব হয়ে শুধু ক্ষমতা হস্তান্তরের অপেক্ষা করছিল। সেই বছরই প্রথম এই দীর্ঘ বিরতি একটা বড় সমস্যা হিসেবে সামনে হাজির হয়।

এসব কারণে নির্বাচনের পর ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় কমিয়ে আনা হয় সংবিধানের ২০তম সংশোধনী। যেখানে নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেকের দিন হিসেবে ২০ জানুয়ারির কথা বলা হয়। সংশোধনী অনুযায়ী, ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের পরের বছরের ২০ জানুয়ারি দুপুরে নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেবেন। আর এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান হিসেবে অভিষিক্ত হবেন তিনি। অর্থাৎ, ঐদিন বেলা ১১টা ৫৯ মিনিট ৫৯ সেকেন্ড পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডেমোক্যাট নেতা জো বাইডেন আজ বুধবার, ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.