স্কুলে ভর্তির দিনই মা-বাবাকে হারালো ছোট্ট শিশুটি

রাজধানীর দক্ষিণখান মোল্লারটেক তেতুলতলা উদয়ন স্কুলের পাশে একটি বাসায় মা-বাবার সাথে হাসি-খুশিটে দিন কাটছিল চার বছরের এক শিশুর। আজ সোমবার (১৮ জানুয়ারি) ছিল তার স্কুলে ভর্তি হওয়ার দিন। তবে এদিনেই সব হারোলো ছোট্ট শিশুটি। ঘাতক বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারালেন তার মা-বাবা।

আজ সোমবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় তারা নিহত হন। বাসা থেকে মোটরসাইকেল করে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে বাসের চাপায় প্রাণ হারান শিশুটির বাবা আকাশ ইকবাল (৩৩) ও মা মায়া হাজারিকা মিতু (২৫)।

ফরিদপুর সদর উপজেলার ধুলদি গ্রামের জাফর শেখের ছেলে আকাশ। একই এলাকাতে বাড়ি স্ত্রী মায়ারও। স্ত্রী মায়া ও চার বছরের একমাত্র মেয়ে আরফা আনজুমকে নিয়ে দক্ষিণখান মোল্লারটেক তেতুলতলা উদয়ন স্কুলের পাশে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন তারা।

নিহত আকাশের ফুপাতো ভাই মো. মিজানুর রহমান মিন্টু জানান, ৬-৭ বছর আগে বিয়ে হয় তাদের। আকাশ উত্তরায় একটি ডেভেলপার কোম্পানিতে চাকরি করতেন। আর তার স্ত্রী মায়া বিমানবন্দরে একটি রেস্টুরেন্টে চাকরি করতেন। তাদের ৪ বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। প্রতিদিন আকাশ তার মোটরসাইকেল করে মায়াকে নিয়ে বাসা থেকে বের হতেন। বিমানবন্দরে মায়াকে নামিয়ে দিয়ে তিনি উত্তরায় তার অফিসে যেতেন। আজও তারা একইসঙ্গে বের হয়েছিলো। কিন্তু আজমেরি পরিবহনের বাসের চাপায় তাদের সব স্বপ্ন নিভে গেলো।

তিনি বলেন, আকাশের বাবা-মা গ্রামে থাকেন। তার বাবা স্ট্রোকের রোগী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন আকাশ। তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জানান, তাদের সন্তানকে আজই প্রথম স্কুলে ভর্তি করা হয়। নিহত আকাশের শাশুড়ি আনজুমকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলেন।

সোমবার সকাল ৭টার দিকে বিমানবন্দর পদ্মা অয়েল পাম্প গেটের সামনে আজমেরি পরিবহনের একটি বাস আকাশ ইকবালের মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়। এতে আকাশ ইকবাল ও তার স্ত্রী মায়া হাজারিকা মিতু ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে বিমানবন্দর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ঘটনার পরপরই ঘাতক বাসটিকে জব্দ করেছে পুলিশ। তবে এর চালক পালিয়ে গেছে।

বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিএম ফরমান আলী জানান, প্রথমে যাত্রীবাহী বাস মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান। পরে বাসটি তাদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তারা।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.